নাঃগঞ্জে ভুয়া ডাক্তার সুবির গ্রেফতার, ২ বছরের জেল ১ লাখ টাকা জরিমানা

115

শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে সেখানে থাকা গৌরি চাঁদ পন্ডিত ওরফে সুবির (৪০) নামে এক ভুয়া ডাক্তারকে ২ বছরের কারাদ- সঙ্গে আরো এক লাখ টাকা অর্থদ- করা হয়েছে। বুধবার (১০ আগস্ট) বিকালে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের পাশে ন্যাশনাল মেডিক্যাল সেন্টারে ওই অভিযান চালায় র‌্যাব-১১ সদস্যরা। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নারায়ণগঞ্জ সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুম আলী বেগের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ওই সাজা দেওয়া হয়। দ-প্রাপ্ত গৌরি চাঁদ পন্ডিত ওরফে সুবির (৪০) কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী এলাকার সতেন্দ্র পন্ডিতের ছেলে।
এদিকে ভূয়া ডাক্তার গ্রেফতার, জেল জরিমানা হলেও এলাকাবাসীর ধারনা সেই ৮ জুলাই তারিখে গ্রেফতারকৃত ভুয়া ডাক্তার মোবারকের মত কয়েকদিনের মধ্যে ফিরে এসে এই পেশাতেই নিয়োজিত থাকবে সুবির।

র‌্যাব ১১ এএসপির নাজিম উদ্দিন আল আজাদ সাংবাদিকদের জানান, ভুয়া ডাক্তার জিসি পন্ডিত (সুচিত) দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে এমবিবিএস সহ বিভিন্ন ডিগ্রী ব্যবহার করে শহরের কয়েকটি ফার্মেসি ও মেডিকেল সেন্টারের রোগী দেখতেন। র‌্যাব ১১ গোয়েন্দা টিম দীর্ঘদিন তার উপর নজর রাখে এবং সে একজন ভুয়া ডাক্তার নিশ্চিত হলে ন্যাশনাল মেডিকেল সেন্টারে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ভুয়া ডাক্তার কোনো সনদ দেখাতে পারেননি। পরে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রট মাসুম আলী বেগ তাকে ডেন্টাল মেডিকেল আইনে ২বছরের কারাদন্ড ও ১লাখ টাকা জরিমানা করেন। এ ছাড়াও হাসপাতালে ভুয়া ডাক্তার রাখার অপরাধে হাসপাতালের মালিক ও ম্যানেজারকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

উল্লেখ্য, গত রমজান মাসে (৮ জুলাই) সিদ্ধিরগঞ্জ গোদনাইল চৌধুরীবাড়ি এআর কমúেøক্সে জনসাস্থ্য জেনারেল নামে একটি হাসপাতালে জনপ্রশাসনের নির্বার্হী ম্যাজিষ্ট্রট শিলু রায় অভিযান চালিয়ে মোবারক নামে এক ভুয়া ডাক্তারকে অপারেশন কক্ষে এক রোগীকে অপারেশন করার সময় আটক করে। পরে ভুয়া ডাক্তার মোবারক ম্যাজিষ্ট্রট শিলু রায় এর সামনে নিজেকে একজন এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয় দেয়। তার সার্টিফিকেট দেখতে চাইলে সে দেখাতে পারেনাই। এসময় হাসপাতালটিতে পুলিশ তল্লাশী করে ২শতাধীক এমবিবিএস এর জাল সার্টিফিকেট, সার্টিফিকেট তৈরি খালি স্টাম্প, ভারত ও চায়নার বিভিন্ন মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬টি সিল, চায়নার নকল ভিসা, ২ টি পাসপোর্ট উদ্ধার করে। পরে ভুয়া ডাক্তার মোবারক হোসেনকে ২ বছরের কারাদন্ড ও হাসপাতালটি সিলগালা করা হয়।

এদিকে ভূয়া ডাক্তার মোবারকের একাধিক অপরাধের আলামত জব্দ হলেও রহস্যজনক ভাবে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট গ্রেফতারের ২১দিন না পেরোতেই তার জামিন মঞ্জুর করে। এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ বিচার বিভাগের কর্মকান্ড নিয়ে বেশ সমালোচনা করা হয়। এমনকি ২শতাধিক এমবিবিএস এর জাল সার্টিফিকেট, সার্টিফিকেট তৈরি খালি স্টাম্প, ভারত ও চায়নার বিভিন্ন মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬টি সিল, চায়নার নকল ভিসা, ২ টি পাসপোর্ট উদ্ধার হলেও এ ঘটনায় কোন মামলা রুজু হয়নি।

অন্যদিকে, ভুয়া ডাক্তার মোবারক জামিনে বেরিয়ে এসে পূনরায় জেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয় দিয়ে রোগী দেখছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি সিলগারা করা হাসপাতালটি খোলার জন্য বিভিন্ন কর্মকর্তাদের কাছে জোর তদ্বির করছেন।

এলাকাবাসী জানান, প্রশাসন ভুয়া ডাক্তার ধরবে আর আইনের ফাঁক দিয়ে তারা রেড়িয়ে এসে পূর্বের পেশায় ফিরে যাবে এমন আইন বাতিল করতে হবে।