নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি আহবায়ক আর আংশিক কমিটির বেড়াজালে আবদ্ধ

108
আহবায়ক ও আংশিক কমিটিতে সীমাবদ্ধ রয়েছে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক কর্মকান্ড। দলের ভেতরে নিজের আধিপত্য, স্বজন প্রীতি, অগণতান্ত্রির আচরনসহ নানা কারনে এসব কমিটি পূর্নাঙ্গ রূপ পাচ্ছে না। ফলে দিনে দিনে রাজনৈতিক দলগুলোতে অগণতান্ত্রিক ও সাংগঠন বিরোধী কাজের দিকে অগ্ররস হচ্ছে। যে কারনে রাজনৈতিক দলগুলোতে বিরোধ, সংঘাতের ঘটনা বেড়ে চলেছে বলে মনে করছেন রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্টরা। তবে এ অবস্থা চলতে থাকলে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক দলগুলোতে সংঘাতের মাত্র বৃদ্ধির পাশাপাশি চেই অব কামন্ড ভেঙ্গ পরার আশঙ্কা বোদ্ধা মহলের। উল্লেখ্য, নারায়নগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি নেই প্রায় দেড়যুগ ধরে। বিএনপির রাজনীতিতে পরিচালিত হচ্ছে আংশিক জেলা কমিটি দিয়ে। এছাড়া বেশীর ভাগ অঙ্গ সংগঠনের কমিটির মেয়াদ একযুগ কিংবা তারা বেশী সময় পার করেছে। মেয়াদ উর্ত্তীণ কমিটি রয়েছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিতে। অন্যদিকে, দলের নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে কমিটি গঠনের দাবি যেমন জোরালো হচ্ছে, তেমনি যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তোলার ব্যাপারেও শীর্ষ নেতাদের প্রতি কর্মীদের মধ্য থেকে চাপ বাড়ছে। সূত্রমতে, নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে গণতান্ত্রিন আচরন কমতে শুরু করেছে। দলের তৃনমূলের নেতাকর্মীদের মতামতকে উপেক্ষা করে চলছে কমিটি গঠন থেকে শুরু করে রাজনেতিক সিদ্ধান্ত গ্রহনের বিষয়টি। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে আহবায়ক কমিটি ও আংশিক কমিটি দিয়ে দল পরিচালনার প্রবনা বৃদ্ধি পেয়েছে। সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি নেই প্রায় দেড়যুগ ধরে। জেলা কমিটি বিলুপ্তির পর আহবায়ক কমিটি গঠন করা হলেও সময় অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে আহবায়ক কমিটিও এক সময় বিলুপ্ত হয়ে যায়। নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি চলছে সভাপতি-সাধারন সম্পাদককে দিয়ে দুই বছর পরিচালনা পর পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়। অঙ্গ সংগঠনগুলোরও এইক অবস্থা। মহানগর ছাত্রলীগ ছাড়া অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনগুলোও মেয়াদহীন। এসব কমিটিগুলো নতুন কওে গঠন না করার ফলে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টিতে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিচ্ছে। এর ফলে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে নতুন নেতৃত্ব গড়ে উঠছে না। অপরদিকে, জেলা বিএনপির আংশিক কমিটি গঠন হয়েছে তা প্রায় সাড়ে ছয় বছর। ৬/৭টি পদ পূরন করে চলছে জেলা কমিটির কর্মকান্ড। জেলা বিএনপির মেয়াদহীন আংশিক কমিটিতে যারা পদ আকড়ে আছে তাদের তাদের বেশীর ভাগই রাজনীতিতে নিস্ক্রীয়। দলীয় কর্মীদেরমতে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পূর্নাঙ্গ কমিটি না থাকায় বিগত দিনের সরকার বিরোধী আন্দোলনে জেলা বিএনপি রাজপথে তেমন প্রতিবাদ কিংবা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। অঙ্গ সংগঠনগুলোর প্রায় একই অবস্থা বিরাজ করছে। জেলা যুবদলের কমিটি থাকলেও মহানগর যুবদল চলছে আহবায়ক কমিটি দিয়ে। স্বেচ্ছা সেবকদলের জেলা ও মহানগর কমিটি আহবায়ক কমিটিতে সীমাবদ্ধ রয়েছে। জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের রাজনীতিও আহবায়ক কমিটির দখলে রয়েছে। তবে এসব কমিটিগুলো কবে নাগাদ পূর্নতা পাবে এ নিয়ে সন্দিহান বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনে নেতাকর্মীরা। আহবায়ক কমিটিরে বেড়াজালে বন্দি রয়েছে জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির রাজনীতিও। আহবায়ক কমিটি দিয়ে চলছে জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধ দল জাতীয় পার্টির কর্মকান্ড। প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক কর্মকান্ডে স্থবিরতা নেমে আসে। তবে দলের তৃনমূলের মতামতের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলো পরিচালিত হলে দলের গণতান্ত্রিক ধারা ফিরে আসবে। ফলে রাজনীতিতে সঠিন নেতৃত্ব গড়ে উঠবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল।