নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নয়া সমিকরণ

90

নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নতুন হিসেব। প্রাপ্তি-প্রত্যাশা নিয়েও চলছে নয়া সমিকরণ। দীর্ঘ ১৪ বছর পর জেলা আওয়ামী লীগ আংশিক গঠনের পর থেকে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নড়েচড়ে বসে। যারা এতোদিন পদের বাইরে থেকে দলের সব কর্মকান্ডে সক্রিয় অংশগ্রহন করেছে তাদের মধ্যে পদ প্রাপ্তি আকাঙ্খা জেগে উঠেছে। আবার অনেকে প্রত্যাশিত পদ পেতেও লবিং-তদবির চালিয়ে যাচ্ছে। শঙ্কিত রয়েছে পদ আকড়ে থাকা সুবিধাবাদী নেতারাও। এতোদিন পর দল পূর্নগঠন শুরু হওয়ায় ওইসব সুবিধাবাদী নেতারা স্বপদে বহাল থাকতে পারবে কিনা এ নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় শীর্ষ নেতারা চাচ্ছেন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কর্মীবান্ধব নেতারা নেতৃত্বে ফিরে আসুক। আর সে লক্ষ্য নিয়েই কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে শুরু করে তৃনমূলে শুরু হয়েছে নানামুখী তৎপরতা। নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নিস্ক্রীয় নেতাদের সক্রিয় করতে এবং পদের বাইরে থেকে যারা দলের হয়ে রাজপথে সক্রিয় রাজনীতি করেছে তাদের মূল্যায়নের আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি গঠনের মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনগুলোকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর কাজ। এছাড়া নেতাকর্মীদের নতুন করে সংগঠিত করতে একাধিক কর্মসূচির হাতে নিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে আগামীকাল অক্টো অফিস এলাকায় অবস্থিত সামসুজ্জোহা ষ্টেডিয়ামে সমাবেশের আয়োজন করেছে। আওয়ামী লীগের নেতাদের মতে, এই সমাবেশ নারায়ণগঞ্জের যে কোন সময়ের চেয়ে স্মরনীয় সমাবেশ হবে। আর এই সমাবেশের মধ্যদিয়ে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ নতুন করে জেগে উঠবে। তবে এই সমাবেশকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। নেতাকর্মীরা সমাবেশকে সফল করতে বেশ কিছুদিন ধরেই প্রস্তুতি সভা অব্যাহত রেখেছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে নারাঢয়ণগঞ্জের একাধিক নেতার স্থান পাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত কেউ গুরুত্বপূর্ন কোন পদে স্থান পায়নি। এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা নেমে আসে। আর এই হতাশা কাটানোর জন্য আগামীকালের সমাবেশ গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বোদ্ধা মহল। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের কমিটিগুলো দীর্ঘদিন ধরে পূর্নগঠন প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। এর ফলে নেতাকর্মীদেও মধ্যে স্থবিরতা নেমে আসে। জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি গঠনের মধ্যদিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চ্য ফিরে আসে। নেতাকর্মীরা নতুন করে চাঙ্গা হয়ে ওঠেছে। জেলা আওয়ামী লীগের পাশাপাশি অঙ্গ সংগঠনগুলোতে নতুন নেতৃত্ব গড়ে তোলার চেষ্টা করছে জেলা আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ইতোমধ্যে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও সক্রিয় নেতাদেও গুরুত্ব দেয়া হবে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলও একই ধরনের কথা বলেছেন। দলের তৃনমূলের কর্মীদেও মতে, জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতার কথা সত্যি হলে অনেক পরে হলেও দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতারা সঠিক মূল্যায়ন পাবে। কর্মীদের মতে, নেতাদের এমন বক্তব্য যেন গতানুগথিক ধারার না হয় সে ব্যাপারে নেতাদের আরো সর্তক হতে হবে। দলের অপর একটি সূত্রে জানাগেছে, জেলা আওয়ামী লীগের খসড়া কমিটি প্রস্তুত করে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড কমিটিগুলোও নতুন করে সাজানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অঙ্গ সংগঠগুলোতেও নতুন নেতৃত্ব গড়ে তোলার চেষ্টা করছে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। তবে আওয়ামী লীগের এই প্রাণচাঞ্চল্য ধরে রাখতে কর্মীবান্ধব নেতাদের সঠিক মূল্যায়নের বিকল্প কিছু নেই বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বোদ্ধা মহল।