বিশ্বকাপ ফুটবলে টুপির আদলে কেন স্টেডিয়াম বানাচ্ছে কাতার

54

আগামি বিশ্বকাপ আয়োজনে ইসলামী ঐতিহ্যর প্রকাশ ঘটাচ্ছে কাতার। ২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের জন্য কাতার আরব মুসলিমদের ঐতিহ্যবাহী টুপি ‘গাহফিয়া’র আদলে একটি স্টেডিয়াম নির্মাণ করবে। দেশটির বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটি এই ঘোষণা দিয়েছেন। আরব দেশগুলো যখন ইসলামী ঐতিহ্য থেকে খানিকটা দূরে সরে যাচ্ছে কাতার তখন এই নীতি গ্রহন করছে। এছাড়া প্রতিবেশী আরব দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সংকটে বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে সংকটের মধ্যেই এই ঘোষণা দিলো কাতার।৫ জুন সৌদি আরব, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন সন্ত্রাসবাদে সহযোগিতার অভিযোগে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে অবরোধ আরোপ করে। এর ফলে স্থল পথে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে পণ্য আমদানি থেকে বিরত থাকতে হয় কাতারকে। এই অবস্থায় সংকটে পড়ে বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়ে। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে কাতার বিকল্প সমুদ্র পথ ও আকাশপথে ইরান ও তুরস্কের কাছ থেকে খাদ্য আমদানি শুরু করে। বিশ্বকাপ আয়োজনকে কাতার বিশ্বব্যাপী দেশকে পরিচিত করার কৌশল হিসেবে গ্রহণ করেছে।এক বিবৃতিতে আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দোহাতে অবস্থিত আল থুমামা স্টেডিয়ামটির নকশা করেছেন একজন কাতারি স্থাপত্যকার। স্টেডিয়ামটি আকৃতি হবে ঐতিহ্যবাহী আরবি টুপি ‘গাহফিয়া’র মতো। এই মাঠে বিশ্বকাপের একটি কোয়ার্টার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। ৪০ হাজার দর্শক মাঠে উপস্থিত হয়ে খেলাটি দেখতে পারবেন।বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটির প্রধান হাসান আল-থাওয়াহাদি বলেন, এই নকশাটি আরব ও মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধতার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হবে। মধ্যপ্রাচ্যে প্রথম বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য শ্রদ্ধাও জানানো হবে এই নকশার মধ্য দিয়ে।২০২২ সালের বিশ্বকাপ আয়োজনের লক্ষ্যে কাতার ৮টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্টেডিয়াম নির্মাণ করছে। এগুলোর একটি হচ্ছে এই আল থুমামা স্টেডিয়াম। পাশাপাশি একটি নতুন বন্দর, মেট্রো রেল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। অবকাঠামো খাতের উন্নয়নে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করবে কাতার।কাতারেরি এই সিদ্ধান্ত মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে দেশটির ভাবমর্যাদা আরো বাড়াবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। বিশ্বকাপ আয়োজন ছাড়া আর্ন্তজাতিক বিশ্ব বিশেষ করে আরব রাজনীতিতে কাতার এখন গুরুত্বপূর্ন একটি দেশ হিসাবে আর্বিভুত হয়েছে। আরব দেশগুলোতে গণজাগরণে একের পর এক সরকার পরিবর্তনের যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিলো তার নেপথ্যে কাতারের ভূমিকা গোপন নয় প্রকাশ্যে। এ সময় পার্শ্ববর্তী দেশ বাহরাইন বা সৌদি আরবে কমবেশি গণবিক্ষোভের ঢেউ লাগলেও কাতারে সে ধরনের কোনো তৎপরতা ছিলো না বরং কাতারের আমির আর দেশটির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা নানাভাবে আরব গণজাগরণের সাথে জড়িত সংগঠন ও ব্যক্তিদের সমর্থন দিয়ে গেছেন।শুধু তাই নয়, মধ্যপ্রাচ্য সঙ্কটে নানা কূটনৈতিক তৎপরতায় কাতারের আমিরকে দেখা যাচ্ছে সামনের সারিতে। গাজায় ইসরাইলি প্রতিরোধ যুদ্ধে প্রকাশ্যে হামাসের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে কাতার। বিভিন্ন আরব দেশে নির্বাসিত হামাস নেতারা এখন অবস্থান করছেন কাতারে। এমনকি মুরসি সরকারের পতনের পর মিসরে মুসলিম ব্রাদারহুডের অনেক নেতা এখন কাতারে অবস্থান করছেন। যদিও এজন্য কাতারের ওপর অন্য আরব দেশগুলো নানাভাবে চাপপ্রয়োগ করে যাচ্ছে।