ওম নমঃ শিবায়ঃ!
যখনই একে শিবপূজার বীজমন্ত্র বলে স্বীকার করে নিচ্ছি আমরা, তার সঙ্গেই দেখা দিচ্ছে একটা মোক্ষম প্রশ্ন।
মন্ত্রে শ্রদ্ধা অর্পণ করছি শিবকে, কিন্তু পূজা অর্পণের মাধ্যম শুধু লিঙ্গ কেন?
প্রশ্নটার উত্তর খোঁজা খুব একটা সহজ কাজ নয়। কেন না, উত্তরগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ধর্ম, পুরাণ কথা, ইতিহাস, সমাজতত্ত্ব এবং বহু যুগ ধরে প্রবাহিত হওয়া ভারতীয় দর্শন। আর রয়েছে নানা মুনির নানা মত।
সেই সব যুক্তি ছুঁয়ে যেতে যেতে সবার আগে এগোনো যাক পুরাণ পথে। পুরাণ কী বলছে শিবের লিঙ্গ পূজা নিয়ে?
ভৃগু ঋষির অভিশাপ:
পুরাণে আছে, ঋষিরা একদা এক মহাযজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন সরস্বতী নদীর তটে। এখন, যজ্ঞ করলে তার ফল অর্পণ করতে হয় কোনও এক দেবতাকে। ব্রহ্মা, বিষ্ণু না শিব- কাকে অর্পণ করা হবে এই যজ্ঞের ফল, তাই নিয়েই সমস্যায় পড়েন ঋষিরা। তখন তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন ভৃগু। তিন দেবতাকে পরীক্ষা করার জন্য তিনি হাজির হন কৈলাসে।
কৈলাসে গিয়ে ভৃগু দেখেন, শিবের কোলে বসে রয়েছেন পার্বতী। অন্তরঙ্গ অবস্থায় আদিপিতা আর আদিমাতাকে দেখে তিনি লজ্জা পান। কিন্তু, শিবের কোনও বিকার ছিল না। ভৃগুর সামনেই তিনি আদর করছিলেন পার্বতীকে। তখন ক্রুদ্ধ হয়ে অভিশাপ দেন ভৃগু। তাঁর যুক্তি ছিল, মহাযোগী হয়েও শিব যখন কামনা সংযত করেননি, তখন পৃথিবীতে তাঁর লিঙ্গেরই পূজা হওয়া উচিত!
ভৃগুর কথা ব্যর্থ হয়নি। তার পর থেকেই পুরাণ মতে পৃথিবীতে শিবের লিঙ্গ পূজা হয়!