১৪ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 103

৫৮টি অনলাইন পত্রিকা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বিটিআরসি

প্রিয়ডটকম, ঢাকাটাইমস ও পরিবর্তনসহ ৫৮ অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

এসব পোর্টাল বন্ধে রোববার সব ইন্টারনেট সেবা সরবরাহ সংস্থা এবং আন্তার্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়েকে (আইআইজি) চিঠি দেয়া হয়েছে।বাংলাদেশ ইন্টারনেট সেবা সরবরাহ সংস্থার মহাসচিব মো. ইমদাদুল হক বলেন, বোরবার বিকালে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের পক্ষ থেকে এসব ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়ার জন্য একটি চিঠি দেয়া হয়েছে।

বন্ধের নির্দেশ পাওয়া সাইটগুলো হল- মধ্যে প্রিয়ডটকম, রাইজিংবিডিডটকম, পরিবর্তনডটকম, রিপোর্টবিডি২৪ডটকম, শীর্ষনিউজ২৪ডটকম, ঢাকাটাইমস২৪ডটকম, বিডিপলিটিকোডটকম, পেজনিউজ২৪ডটকম, রেয়ারনিউজ২৪ডটকম, বিএনপিনিউজ২৪ডটকম, প্রথমবাংলাদেশডটনেট, ডেইলিআমারদেশডটএক্সওয়াইজেড, ডিএনএনডটনিউজ, রাজনীতি২৪ডটকম, আরবিএন২৪ডটকোডটইউকে, সংবাদ২৪৭ডটকম, দেশভাবনাডটকম, আমারদেশ২৪৭ডটকম, অ্যানালাইসিসবিডিডটকম, আওয়াজবিডিডটকম, বদরুলডটঅরগ, বিএনপিঅনলাইনউইংডটকম, ইনডটবিএনপিবাংলাদেশডটকম, বিএনপিবাংলাদেশডটকম, বাংলামেইল৭১ডটইনফো, এটিভি২৪বিডিডটকম, বাংলাস্ট্যাটাসডটকম, বিবাড়িয়ানিউজ২৪ডটকম, শিবিরডটঅরগডটবিডি, নিউজ২১-বিডিডটকম, ওয়াননিউজবিডিডটনেট, নিউজবিডি৭১ডটকম, জাস্টনিউজবিডিডটকম।

মির্জা ফখরুলের গাড়িতে হামলা

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িতে হামলা করেছে মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীদের সমর্থকরা। শনিবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে মির্জা ফখরুলের গাড়িতে হামলা চালানো হয়। এ সময় গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায় এবং চালক হেলাল আহত হন।

ঘটনাস্থলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বিকালে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে কাজী মনিরুজ্জামান মনিরকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা দেয়ার পর বিক্ষোভে ফেটে পড়েন অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের সমর্থকরা।

নারায়ণগঞ্জে তৈমুর আলম খন্দকার মনোনয়ন না পাওয়ায় তার সমর্থকরা চেয়ারপারসন কার্যালয় লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়ে। এ সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িতেও তারা হামলা করে। তবে এতে ফখরুলের গাড়ি চালক হেলাল ছাড়া আর কেউ আহত হয়েছে কিনা জানা যায়নি। 

সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, শনিবার রাত আড়াইটায় মির্জা ফখরুল গুলশানের চেয়ারপার্সনের কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় তার গাড়ি অবরুদ্ধ করা হয়। দীর্ঘ ৩০ মিনিট চেষ্টা করেও তিনি কার্যালয় থেকে বের হতে পারেননি। 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় রাত ৩টার দিকে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তাকর্মী চেয়ারপার্সনস সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ) একটি মানববেষ্টনী তৈরি করে তাকে ঘিরে গুলশান-২ নম্বর চত্বরের দিকে নিয়ে যান। 

সে সময় মির্জা ফখরুলের ব্যক্তিগত গাড়িটি কার্যালয় থেকে খালি বেরিয়ে মূল সড়ক থেকে ফখরুলকে তুলে নিয়ে যায়।

এর আগে সন্ধ্যা থেকে দেশের বিভিন্ন আসনে বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীদের কর্মী সমর্থকরা আন্দোলন করে। 
মধ্যরাতে চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে গেইট ভেঙে তারা কার্যালয়ের ভেতর প্রবেশের চেষ্টা করে। গেটের অপর পাশ থেকে সিএসএফের কর্মকর্তারা প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

জানা গেছে, মনোনয়নবঞ্চিত এহছানুল হক মিলনের অনুসারীরা ফখরুলের পথ আটকে তাঁকে চারপাশ থেকে ঘিরে রাখেন। 

তাদের সঙ্গে যোগ দেন গোপালগঞ্জ-১ আসনের সেলিমুজ্জামান সেলিম ও মানিকগঞ্জে প্রয়াত মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে অ্যাডভোকেট খোন্দকার আবদুল হামিদ ডাবলুর কয়েক হাজার নেতাকর্মী।

তারা গুলশান কার্যালয়ের সামনে এসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা কার্যালয় লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। তাদের ছোড়া ইটের আঘাতে কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলার জানালার কাচ ভেঙে যায়।

বাইরে যখন বিক্ষোভ চলছিল, সেসময় ভেতরেই ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খানসহ সিনিয়র কয়েক নেতা।

পরিস্থিতি শান্ত করতে দেলোয়ারের দুই ছেলে ও মেয়েকে কার্যালয়ের ভেতরে ডেকে নেয়া হয়। এ সময় নজরুল ইসলাম খান তাদের সঙ্গে কথা বলেন। দেলোয়ারের সন্তানরা নজরুল ইসলাম খানের কাছে জানতে চান, এ দলে কি তার বাবার কোনো অবদান নেই।
মনোনয়ন তো দূরের কথা, তাদের কেন কার্যালয়ে ঢুকতে দেয়া হল না। এ সময় নজরুল ইসলাম খান তাদের শান্ত হতে বলেন। বাইরে বিক্ষুব্ধ কর্মীদের চলে যেতে বলেন। কার্যালয়ের নিচ তলায় তাদের অপেক্ষা করতে বলেন নজরুল।

এরপর তৈমুর আলম খন্দকারকে ভেতরে ডাকেন নজরুল ইসলাম খান। তার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ সময় তৈমুর ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, আমি কার্যালয়ের বাইরে আছি। মহাসচিবসহ আপনারা কীভাবে বাইরে বের হন, তা আমি দেখে নেব। এ বলে তিনি নিচে চলে আসেন।

দুপুরে চাঁদপুর-১ আসনের মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী দলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক এহছানুল হক মিলনের অনুসারীরা নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন।
একপর্যায়ে তারা কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। মূল গেটে প্রতিবাদ মিছিল লেখা একটি ব্যানার টাঙিয়ে দেয়া হয়। এ সময় মিলনের স্ত্রী নাজমুন নাহার বেবী ছাড়াও বিক্ষোভে অংশ নেন চাঁদপুরের কচুয়া থানা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। 

বেবী সাংবাদিকদের বলেন, বিগত সময়ে যারা দলের জন্য কাজ করেছেন, তাদের মূল্যায়ন করা হয়নি।

এরপর প্রার্থী পরিবর্তনের জন্য ১২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়ে বিএনপির নেতা আ ন ম এহছানুল হক মিলনের অনুসারী নেতাকর্মীরা নয়াপল্টন কার্যালয়ের ফটকের তালা খুলে দেন। এরপর তারা দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে দেখা করে তারা তাদের ক্ষোভের কথা জানান।

বিক্ষোভরত মিলনের একাধিক সমর্থক অভিযোগ করেন, এহছানুল হক মিলনের জায়গায় চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনে দলীয় মনোনয়ন দেয়া কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. মোশাররফ হোসেনকে এলাকায় কেউ চেনেন না।

সারা জীবন তিনি মালয়েশিয়ায় ছিলেন। এহছানুল হক মিলন পাঁচ বছর দেশের বাইরে থাকলেও তার সঙ্গে এলাকার মানুষের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। এখনও তিনি জেলে আছেন, তার ত্যাগকে মূল্যায়ন করা হয়নি।

মনোনয়নবঞ্চিতদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে যারা মনোনয়ন পাচ্ছেন, তাদের পক্ষেই নেতাকর্মীরা ‘একট্টা’।

মনোনয়ন নিয়ে ছোটখাটো দুই-একটি প্রতিক্রিয়া- এটা কি নতুন কিছু? এটা নতুন নয়। বরং যাদের দেয়া হয়েছে, তারা অত্যন্ত জনপ্রিয় তাদের এলাকায়। আন্দোলন-সংগ্রাম থেকে শুরু করে এলাকায় তাদের সম্পৃক্ততা অত্যন্ত নিবিড়। যোগ্যদেরই মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

নৌকার মাঝি শামীম ধানের চাষী কাসেমী

সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে,চরম নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে অবশেষে নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের আওয়ামীলীগের আলোচিত নেতা এমপি একেএম শামীম ওসমানের সঙ্গে ধানের শীষ প্রতীকে লড়াই করবেন নারায়ণগঞ্জ জেলা জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি মুফতি মনির হোসেন কাসেমী। ৮ ডিসেম্বর শনিবার ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে মুফতি মনির হোসেন কাসেমীকে মনোনয়নের চিঠি দেয়া হয়।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহানগর সেক্রেটারি মাওলানা ফেরদৌসুর রহমান চিঠি হাতে পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, মুফতি মনির হোসেন কাসেমী ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন।

২০ দলীয় জোট এ আসনটি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে ছাড় দেয়। ফলে এ আসনটিতে বিএনপির দুইজনকে মনোনিত করা হলেও তাদের মধ্যে কাউকে চূড়ান্তভাবে মনোনিত করা হয়নি।

নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-৪ সংসদীয় আসন। এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন বিদ্রোহী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। ৭ ডিসেম্বর শুক্রবার নির্বাচন কমিশন গিয়াসউদ্দীনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হলে নির্বাচনে লড়াই করার কথা জানান। এখানে আওয়ামীলীগ মনোনয়ন পত্র দাখিল করে পরবর্তীতে শামীম ওসমানকে সমর্থন দিয়ে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগের শ্রমিক উন্নয়ন কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহমেদ পলাশ।

সূত্রমতে, এ আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী একেএম শামীম ওসমান, বিএনপির মনোনিত প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মুহাম্মদ শাহআলম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী হিমাংসু সাহা, ন্যাপের প্রার্থী ওয়াজিবুল্লাহ অজু, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের প্রার্থী সেলিম মাহামুদ, কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী ইকবাল মাহামুদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী মুফতি মনির হোসেন কাসেমী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্র্টির প্রার্থী মাহামুদ হোসেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী জসিমউদ্দীনের মনোনয়ন গত ২ ডিসেম্বর বৈধ ঘোষণা করে জেলা রিটার্নিং অফিসার রাব্বী মিয়া।

একই দিন রিটার্নিং অফিসার এখানে ১৬ জন মনোনয়ন দাখিলকারীর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন ও তার ছেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মুহাম্মদ কাউসার, জেলা বিএনপির সেক্রেটারি বিএনপির মনোনিত প্রার্থী মামুন মাহামুদ, কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগের শ্রমিক উন্নয়ন কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক স্বতন্ত্র প্রার্থী কাউসার আহমেদ পলাশ ও কেন্দ্রীয় জাতীয়পার্টির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দীন খোকা মোল্লার মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়।

শুক্রবার মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন ও মামুন মাহামুদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। বৈধ ঘোষণার পর মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন নির্বাচনে তিনি শেষ পর্যন্ত থাকবেন। এ আসনে বিএনপির দুই মনোনিত প্রার্থী মুহাম্মদ শাহআলম ও মামুন মাহামুদের মধ্যে কাউকে মনোনিত না করে জোটের শরীক দলের নেতা মুফতি মনির হোসেন কাসেমীকে মনোনিত করেছে ২০ দলীয় জোট তথা ঐক্যফ্রন্ট।

নেতাকর্মীদের সূত্রে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে এখানে আওয়ামীলীগের মনোনয়নে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় এমপি নির্বাচিত হন একেএম শামীম ওসমান। এর আগের নির্বাচনে যখন শুধুমাত্র ফতুল্লা থানা এলাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন ছিল ওই নির্বাচনে শামীম ওসমানের চাচী চলচিত্র নায়িকা সারাহ বেগম কবরী এখানে এমপি নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে বিএনপির মনোনিত প্রার্থী ছিলেন মুহাম্মদ শাহআলম।

এ আসনে আওয়ামীলীগ থেকে এমপি শামীম ওসমান ছাড়াও নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পত্র ক্রয় করেছিলেন কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগের শ্রম কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহমেদ পলাশ, কেন্দ্রীয় মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদা হাসনাত ও আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সদস্য কামাল উদ্দীন মৃধা। কিন্তু এখানে শামীম ওসমানকে এককভাবে মনোনয়ন দেয় আওয়ামীলীগ।

অন্যদিকে এ আসনের সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। তিনি সাংবাদিকদের কাছে অনেকটা জোর দিয়েই বলেছেন, আমি নির্বাচনে থাকছি এটাই সত্য।’ তিনি ২০০১ সালে কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সহ-সভাপতি পদ থেকে নির্বাচনের মাত্র ২১ দিন পূর্বে বিএনপিতে যোগদান করে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে এমপি নির্বাচিত হন। প্রথমে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির আহ্বায়ক শিল্পপতি সফর আলী ভুইয়াকে দেয়া হলেও তার মনোনয়ন বাতিল করে শামীম ওসমানকে পরাজিত করতে আওয়ামীলীগ থেকে আসা গিয়াসউদ্দীনকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। ওই সময় শামীম ওসমানের সঙ্গে রাজনীতি করে আসা গিয়াসউদ্দীন শামীম ওসমানকেই পরাজিত করেন। পরবর্তীতে শামীম ওসমান দেশ ছেড়ে চলে যান এই গিয়াসের ভয়েই। গিয়াসউদ্দীন ৯ম সংসদ নির্বাচনে কারাগারে থাকায় মনোনয়ন পাননি।

এখানে ৯ম সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলম। তিনিও কল্যান পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। বিএনপিতে এসে মনোনয়ন পেলেও তিনি আওয়ামীলীগের প্রার্থী সারাহ বেগম কবরীর কাছে পরাজিত হন। তবে এ আসনে গিয়াসউদ্দীন ও শাহআলম দুজনের কেউই গত দশ বছরে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন না। শাহআলমের নেতাকর্মীরা দাবি করেন শাহআলম কেন্দ্রীয় বিএনপির ডোনার এবং গিয়াসের নেতাকর্মীরা দাবি করেন গিয়াস যখন এমপি ছিলেন তখন যা কামিয়েছেন তার সিংহভাগ হাওয়া ভবনে পাঠিয়েছিলেন। যে কারনে এইদুজনের কেউই রাজপথে সক্রিয় ছিলেন না। একটি মানববন্ধনেও ছিলেন না এই দুই নেতা।

তবে মনোনয়ন পাওয়া জেলা বিএনপির সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুদ একাধিকবার রাজপথে পুলিশের লাঠিপোটার শিকার হয়েছিলেন। বেশকবার তিনি মাসের পর মাস কারাভোগ করেছিলেন। সম্প্রতি তিনি তিন মাস কারাভোগ শেষে জামিনে বের হয়েই মনোনয়ন বোর্ডের কাছে সাক্ষাতকার দিতে যান। এ আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল হাই রাজু ও পারভেজ আহমেদ।

গত নির্বাচনের আগে এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশা নিয়ে বেশ প্রচারণায় ছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক পৌর প্রশাসক আবদুল মতিন প্রধান। মতিন প্রধান ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগে যোগদান করেছেন। সেন্টু গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেননি। তিনি এখন শামীম ওসমানের পক্ষে ভোট চাচ্ছেন নিয়মিত। তিনি একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, শামীম ওসমান উন্নয়ন করে জনগণের পীর হয়ে গেছেন।’ এ নির্বাচনেও সেন্টু মনোনয়ন চেয়েছিলেন।

এ আসনে জাতীয়পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলেন কেন্দ্রীয় জাতীয়পার্টির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দীন খোকা মোল্লা। তিনি মনোনয়ন দাখিল করলেও তার মনোনয়ন বাতিল করেছে রিটার্নিং অফিসার। তবে তিনি আপিল করে বৈধতা পেয়েছেন।

ফতুল্লায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার উপর ছাত্রলীগ নেতা মান্নান বাহিনীর হামলা

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় রাজনীতিতে একক ভাবে প্রভাব বিস্তার করতে ছাত্রলীগ নেতা মান্নান বাহিনীর ছিচকে সন্ত্রাসীরা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নোমান আহম্মেদ অর্কোসহ তার বড় ভাইয়ের উপর হামলা চালিয়েছে। এসময় নামধারী ছাত্রলীগের ক্যাডাররা নোমান আহম্মেদ অর্কোসহ তার বড় ভাইকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। তবে ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মান্নানের ইন্ধনে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার বিকেলে ফতুল্লার মুসলিমনগর নয়াবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটলে শনিবার সকালে আহত নোমান আহম্মেদ অর্কো বাদী হয়ে মান্নান বাহিনীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে।

এদিকে ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক এমএ মান্নান নিজেকে এমপি শামীম ওসমান আস্থাভাজন নেতা হিসাবে এলাকায় জাহিল করে ভাতিজা বিল্লালকে দিয়ে একটি বিশাল বাহিনী গড়ে তোলে। এ বাহিনী মুসলিমনগর নয়াবাজার সহ আশে পাশের এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। এ বাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তাকে নাজেহাল করে দেয়। আর মান্নানের ইন্ধনেই সন্ত্রাসী বাহিনীরা এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডসহ নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। এতে মান্নান ঐ এলাকার আওয়ামীলীগ ও এমপি শামীম ওসমানের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে বলে এলাকার সচেতন মহল মনে করছে। আর শুক্রবার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নোমান আহম্মেদ অর্কোসহ তার বড় ভাইয়ের উপর হামলার ঘটনায় এলাকায় নিন্দ্রার ঝড় উঠেছে। এছাড়া আহতদের ছবি দিয়ে ফেইসবুকে বিভিন্ন মহলে সন্ত্রাসীদের ধিক্কার জানাচ্ছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ফতুল্লার মুসলিমনগর নয়াবাজার এলাকার মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলামের ছেলে নোমান আহম্মেদ অর্কো স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সাথে সাথে সম্পৃক্ত। তার সমর্থীত লোকজন নিয়ে স্বেচ্ছাসেবকলীগের ব্যানার নিয়ে আওয়ামীলীগ ও শামীম ওসমানের মিছিল মিটিংয়ে যোগদান করেন। বিশেষ করে অর্কো মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন ও ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের অধিনে রাজনীতি করে। আর স্বেচ্ছাসেবকলীগের রাজনীতি করার অপরাধে ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মান্নান অসন্তোষ প্রকাশ করে। যার কারনে নোমান আহম্মেদ অর্কোকে দমাতে তার পিছনে মান্নান বাহিনীর লোককে লেলিয়ে দেয়। তার কারন মান্নান চায় মুসলিমনগর নয়াবাজার এলাকায় তার অধিনে ছাড়া কেউ অন্য কারোর রাজনীতি করতে পারবে না। সেই সুবাধে মান্নানের প্রধান হাতিয়ার ভাতিজা বিল্লালের লোকদের দিয়ে অর্কোকে এলাকায় কোনঠাসা করতে চাইছে। সম্প্রতি অর্কোর সাথে এলাকার লোকজন স্বেচ্ছাসেবকলীগের মিছিলে যাওয়ার অপরাধে রকি নামে এক ব্যক্তিকে মান্নান বাহিনীর সদস্য জজ মিয়া, আলম, নিজাম, হেলাল সহ আরো বেশ কয়েকজন মিলে মারধর করে। এতে রকি কোন প্রতিবাদ করেনি। শুক্রবার বিকেলে রকিকে ফের মারধর করার সময় অর্কো প্রতিবাদ করায় মান্নান বাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বেদম মারধর করতে থাকে। এসময় অর্কোর বড় ভাই আব্দুল্লাহ আল ইমরান তার ছোট ভাইকে বাচাতে গেলে তাকেও মারধর করে। পরে মান্নান বাহিনীর ছিচকে সন্ত্রাসীরা অর্কোর বাড়িতে হামলা চালায় এবং তাদের বাড়ির গেইট ভাঙচুরের চেষ্টা করে। পরে নোমান আহম্মেদ অর্কোসহ তার বড় ভাইকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ ৩’শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। তারা চিকিৎসা শেষে নোমান আহম্মেদ অর্কো বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।

ফতুল্লা মডেল থানার এসআই কাজি এনামুল নোমান আহম্মেদ অর্কোর দায়েরকৃত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, যারা এ হামলার সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কে হচ্ছেন বিএনপির চুড়ান্ত প্রার্থী শাহআলম না গিয়াস?

নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা করেছে নির্বাচন কমিশন। তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষনার পরপরই নারায়ণগঞ্জে গুজব ছড়িয়ে পড়ে নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনে কে হচ্ছেন বিএনপির চুড়ান্ত প্রার্থী শাহআলম না গিয়াসউদ্দিন।

বিকাল থেকে ২০৬ আসনে বিএনপির প্রার্থীদের চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ শুরু করেন মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমীর। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ ২ (আড়াইহাজার) আসনে নজরুল ইসলাম আজাদের নাম ঘোষনা করা হয়। নারায়ণগঞ্জ ৩ (সোনারগাঁ) আসনে আব্দুল মান্নান একক প্রার্থী হওয়ায় তার মনোনয়ন নিয়ে কোন জটিলতা নেই। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ১ (রূপগঞ্জ), নারায়ণগঞ্জ ৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) ও নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের মনোনয়ন কাকে দেয়া হয়েছে তা এখনো ঘোষনা না করায় নানা গুজব ছড়িয়ে পড়েছে জেলা। একেকজন প্রার্থীর পক্ষে ছড়ানো হচ্ছে নানা গুজব। গুজবে সবচেয়ে আলোচিত হয়ে উঠেছেন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। ইতোমধ্যে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনে বিএনপির টিকেট পাচ্ছেন গিয়াসউদ্দিন। কিন্তু নির্বাচন অফিস সূত্র জানিয়েছেন, মনোনয়ন জমার সময়ে যে দলের বা স্বতন্ত্র হিসাবে প্রার্থীরা নিজেদের চিহিৃত করেছেন তার বাইরে যাবার কোন সুযোগ নেই। ধানের শীষের প্রার্থী যেমন নৌকায় যেতে পারবেন না তেমনি স্বতন্ত্র প্রার্থীও কোন দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে কোন প্রার্থীর যদি মনোনয়ন জমার দেয়ার সময়ের মার্কার কোন পরিবর্তন হয় তাহলে তার মনোনয়ন বাতিল হয়ে যাবে। তাহলে কে হচ্ছেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী শাহ আলম না গিয়াসউদ্দিন।

বিএনপির প্রার্থী শাহ আলম সোমবার নির্বাচনী গণসংযোগে নামবেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ১০ ডিসেম্বর(সোমবার) থেকে নির্বাচনী গণসংযোগে নামছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের বিএনপি মনোনিত প্রার্থী শাহ আলম। তার একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বিশ দলীয় জোট থেকে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি শিল্পপতি শাহ আলমের প্রার্থীতা চূড়ান্ত হয়েছে। আর এ আভাস পেয়ে তার কর্মী সমর্থকরা নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের নির্বাচনী এলাকায় কর্মীসভা ও উঠান বৈঠক করে নেতাকর্মীদের সংগঠিত করছে।

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা জানান, শাহ আলমই হচ্ছেন বিএনপির মনোনিত প্রার্থী। এছাড়া শাহ আলমই বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থী এ বিষয়টি বিএনপির কেন্দ্রীয় একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এদিকে, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের নেতাকর্মীরা মনে করছেন, শাহ আলম রাজনীতিতে পরিচ্ছন্ন নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি এমপি নির্বাচিত হলে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের উন্নয়ন হবে।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী করা হয় পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী শাহ আলমকে। ওই নির্বাচনে শাহ আলমের প্রতিপক্ষ ছিলো আওয়ামীলীগের প্রার্থী চিত্রনায়িকা সারাহ বেগম কবরী।

শাহ আলম নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সারাহ বেগম কবরীর কাছে মাত্র আড়াইশ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন। তবে বিএনপি মনে করে শাহআলমকে জোর করে হারানো হয়েছিল। নিজ দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে শাহ আলমের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।

প্রসঙ্গত,আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সাংসদ শামীম ওসমান। রোববার সকালে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার স্বাক্ষর করা মনোনয়ন চিঠি হাতে পেয়েছেন শামীম ওসমান

অবশেষে বৈধ হলেন গিয়াসউদ্দিন

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল আবেদনের দ্বিতীয় দিনে প্রার্থীতা ফিরে পেয়ে বৈধ হলেন মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। শুক্রবার ৭ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় নির্বাচন কমিশনে শুরু হওয়া আপিলের শুনানি শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদা এই রায় দেন।
এর আগে ২ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা রিটার্র্নিং কর্মকর্তা মোঃ রাব্বি মিয়া ঋণ খেলাপির অভিযোগ এনে অবৈধ ঘোষনা করেন মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে।
প্রর্থীতা ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন গিয়াস উদ্দিন। দ্বিতীয় দিনে আপিল শুনানি শেষে ফিরে পেলো তার প্রার্থীতা।
ইসির তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ৯ ডিসেম্বর প্রর্থীতা প্রত্যাহারের শেষ সময়। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার পর থেকে প্রর্থী ও তার সমর্থকরা নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের খসড়া ইশতেহার।

★ পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকা যাবেনা।

★ত্রিশোর্ধ্ব শিক্ষিত বেকারের জন্য বেকার ভাতা চালু
করা হবে।

★বেসরকারি শিক্ষা পুরোপুরি ভ্যাটমুক্ত হবে।

★সামরিক বাহিনী ও পুলিশ ব্যতীত সকল সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা তুলে দেওয়া এবং ৩ বছরের মধ্যে সরকারি সকল শূন্যপদে নিয়োগ দেয়া হবে।

★অনগ্রসর জনগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা চালু করা হবে।

★পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করা হবে।

★সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।

★প্রথম বছর থেকেই ডাকসুসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করা হবে।

★মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষা দিয়ে বিদেশে কর্মসংস্থান করা হবে।

★দুর্নীতির বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে।

★মুঠোফোনে ইন্টারনেটের খরচ অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে। দেশের বিভিন্ন গণজমায়েতের স্থানে ফ্রি ওয়াই-ফাইয়ের ব্যবস্থা করা হবে।

★সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। সংখ্যালঘুদের ওপর যেকোনো রকম হামলার বিচার হবে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে।

★ নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে।

★শহরে গণপরিবহনকে প্রাধান্য দিয়ে পরিবহন নীতি প্রণয়ন করা হবে।

★তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, রোহিঙ্গা সমস্যাসহ অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান করা হবে।

★ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য কল্যাণমূলক প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।

★দেশের দারিদ্র্যপ্রবণ জেলাগুলোতে শিল্পায়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।

★ক্ষমতায় এলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করবে ঐক্যফ্রন্ট।

★সরকারি পদক্ষেপ এবং সরকারের পদধারীদের বিরুদ্ধে সমালোচনা, এমনকি ব্যঙ্গ-বিদ্রূপেরও অধিকার থাকবে।

★সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সব গণমাধ্যমের ওপর কোনো রকম প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সরকারি নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।

★ন্যায়পাল নিয়োগ করা হবে এবং সংবিধান-নির্দেশিত সব দায়িত্ব পালনে ন্যায়পালকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হবে।

★দুর্নীতি দমন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হবে। দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা গ্রেপ্তারে সরকারের অনুমতির বিধান (সরকারি চাকরি আইন-২০১৮) বাতিল করা হবে।

★ব্যাংকিং খাতে ও শেয়ারবাজারে লুটপাটে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

★নারীর জন্য সংরক্ষিত আসনের প্রথার পরিবর্তে সরাসরি নির্বাচনের ক্ষেত্রে নারীর জন্য বাধ্যতামূলক ২০ শতাংশ মনোনয়নের বিধান করা হবে।

★প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে। ইউরোপ, জাপানসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শ্রমশক্তির রপ্তানির জন্য নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করা হবে।

★দায়িত্বপ্রাপ্তির এক বছরের মধ্যে মানুষকে ভেজাল ও রাসায়নিকমুক্ত নিরাপদ খাদ্য পাওয়ার নিশ্চয়তা প্রদান করা হচ্ছে।

★অতিদরিদ্র ও দুস্থদের জন্য বিনা মূল্যে খাদ্য বিতরণ এবং বিনা মূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।

★বয়স্ক ভাতা, দুস্থ মহিলা ভাতা, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তাদের ভাতার পরিমাণ এবং আওতা বাড়ানো হবে।

★শ্রমিক-খেতমজুরসহ গ্রাম ও শহরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সুলভ মূল্যে রেশনিং চালু করা হবে।

★ঐক্যফ্রন্ট সরকারের দায়িত্ব পেলে সব খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হবে।

★গার্মেন্টসসহ অন্য সব শিল্প এলাকায় শ্রমিকদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণের মাধ্যমে আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

★কৃষি ভর্তুকি বাড়িয়ে সার বীজ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সহজলভ্য করা হবে।

ভিকারুননিসার ৩ শিক্ষক বরখাস্ত, বাতিল এমপিও; স্থগিত সকল শাখার কার্যক্রম।

নিজস্ব প্রতিবেদক:নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রি আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী হিসেবে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষককে বরখাস্ত ও সকল শাখার কার্যক্রম স্থগিত। একই সঙ্গে এই ঘটনায় তাদের এমপিও বাতিল ও বিভাগীয় মামলার  নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এ ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ আজ বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

অভিযুক্ত তিন শিক্ষক হলেন- ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৗস, প্রভাতী শাখার প্রধান জিন্নাত আরা এবং শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনা।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ভিকারুননেসা স্কুলের দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রতিষ্ঠানটির সব ধরণের অনিয়ম উঠে আসছে। অভিভাবকরাও নানা অনিয়মের কথা বলেছেন। ঐ ঘটনার জন্য দায়ী ৩ জনের নাম এসেছে।
তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী তিনজনকে বরখাস্ত করার জন্য ম্যানেজিং কমিটিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিভাগীয় মামলাসহ সকল আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

একই সঙ্গে এই ঘটনায় অভিযুক্ত তিন শিক্ষকের এমপিও বাতিল করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।

এর আগে গত সোমবার দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগরের নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় অরিত্রি। মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর পল্টন থানায় ‘আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী’ হিসেবে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন অরিত্রির বাবা।

মামলার আসামিরা হলেন- অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতী শাখার প্রধান জিনাত আক্তার ও শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনা হেনা।

ফতুল্লায় শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ, ওসিসহ আহত অর্ধশত

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বিসিক শিল্প নগরীতে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত দেড় ঘন্টা ব্যাপী এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ সময় ফতুল্লায় বিসিক শিল্প নগরীর ফকির নীট ওয়্যার নামের একটি রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভসহ বেশ কয়েকটি কারখানা ভাঙচুর করেছে। পুলিশ বাধা দিলে এ সংঘর্ষের ঘটনায় শিল্প পুলিশের একজন সহকারি পুলিশ সুপার, ফতুল্লা থানার ওসি ও বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ প্রায় অর্ধশত সাধারণ শ্রমিক আহত হয়েছেন।

বিকেএমইএর’র সাবেক সভাপতি ও এম.ভি নীট ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালনা মো: হাতেম জানান, উৎপাদান মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে ফকির নীটওয়্যার কারখানার শ্রকিদের মধ্যে গত তিনদিন ধরে শ্রমিক অসন্তোষ চলছিল। মালিকপক্ষ মজুরি বৃদ্ধি করলেও দাবি অনুযায়ী বৃদ্ধি না হওয়ায় শ্রমিকরা গতকাল রোববার কারখানাটির অভ্যন্তরে বিক্ষোভ করে।

এ অসন্তোষ নিরসনে কারখানাটির মালিকপক্ষ আজ সকালে বিসিক কর্তৃপক্ষ, বিকেএমইএ কর্তৃপক্ষ ও শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে আলোচনায় বসেন। তারা আগামীকাল বিভিন্ন কারাখানার মালিকদের সাথে আলোচনা করে তাদের সাথে উৎপাদন মজুরি সমন্বয় করার আশ্বাস দিলেও শ্রমিকরা তা মেনে না নিয়ে বিসিকের অভ্যন্তরে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে এ বিক্ষোভ পুরো বিসিকে ছড়িয়ে পড়লে বিশেষ পোশাকধারী বহিরাগত শতাধিক যুবক এসে শ্রমিকদের সাথে যোগ দেয়।

এসময় তারা বিসিকসহ আশপাশের ২০ থেকে ২৫টি কারখানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। বিসিকের এম.ভি নীটওয়্যার, নরসিংপুর এলাকার সাহিল গ্রুপ, হাজী হাসেম স্পিনিং মিল ও তারা স্পিনিং মিলে ব্যাপক ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে অসংখ্য জানালার কাঁচ ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।

তিনি আরো জানান, শ্রমিক ও বহিরাগতরা মিলে শিল্প মালিকদের কয়েকটি ব্যক্তিগত গাড়িও তারা ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ ও ফতুল্লা থানা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারাসহ বিপুল পরিমান পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এতে শ্রমিকরা পুলিশের উপর ব্যাপক ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে শুরু হয় শ্রমিক-পুলিশের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া।

ঘন্টাব্যাপী দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের সময় শিল্প পুলিশের সহকারি পুলিশ সুপার, ফতুল্লা থানার ওসি মঞ্জুর কাদের ও ৭/৮জন পুলিশ সদস্য সহ প্রায় অর্ধশত সাধারণ শ্রমিক আহত হয়। এসময় পুলিশ উত্তেজিত হয়ে বহিরাগতদের লাঠিচার্জ করে। এসময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষের কারণে বিসিক সংলগ্ন নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ সড়কে প্রায় দুই ঘন্টা যানচলাচল বন্ধ থাকে।

বিকেএমইএ’র সাবেক এই কর্মকর্তা ও শিল্প মালিক জানান, এ ঘটনার নেপথ্যে একটি কুচক্রী মহল জড়িত রয়েছে যারা এদেশের গার্মেন্টস শিল্পকে ধ্বংস করে দেয়ার ষড়যন্ত করছে। তিনি এ হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।

নারায়ণগঞ্জ শিল্প পুলিশ-৪ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহাবুব উন নবী জানান, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্তণে আনার জন্য শ্রমিকদের বোঝাতে চেষ্টা করে। তবে শ্রমিকদের মধ্যে বহিরাগত শতাধিক যুবক মিলে গিয়ে পুলিশের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ হামলা করে। তারা বেশ কয়েকটি শিল্প কারখানা ও যানবাহন ভাঙচুর করে। এতে পুলিশ ক্ষিপ্ত হয়ে বহিরাগতদের লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

শ্রমিকদের হামলায় শিল্প পুলিশ ও ফতুল্লা থানার আহত পুলিশ কর্মকর্তা বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। তবে এর সংখ্যা এখন নিশ্চিত করে বলা যাবে না। পরে খোঁজখবর নিয়ে বলা যাবে। এ ঘটনার পর বিসিক শিল্প নগরীতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ সড়কে স্বাভাবিক যানচলাচল শুরু হয়েছে।

শিল্প পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো জানান, পুলিশের উপর হামলা, শিল্প প্রতিষ্ঠান ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করার ব্যাপারে তদন্ত কাজ চলছে। তাদেরকে শনাক্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।