১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 155

শিক্ষিকা লাঞ্চনাকারী জাপা নেতা মজিদ খন্দকার’র জামিন

হাজীগঞ্জের স্কুল শিক্ষিকা শাহীনুর পারভীনকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেফতার কৃত নারায়নগঞ্জ জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবুল মজিদ খন্দকার জামিন দিয়েছে আদালত।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারী) সকালে আদালতে হাজির করে জামিন চাইলে আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দও এই জামিন মঞ্জুর করেন।

গত, ১৩ ফেব্রুয়ারী দুপুরে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ অভিযুক্ত আসামী মজিদ খন্দকারকে নারায়নগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে জেল হাজতের নির্দেশ দেন। একই সাথে বুধবার তার জামিন শুনানীর দিন ধার্য্য করেন।

প্রসঙ্গ, গত ১১ ফেব্রুয়ারী রাতে স্কুল শিক্ষিকা শাহীনুর পারভীনের বাসায় গিয়ে আবুল মজিদ খন্দকার ও তার স্ত্রী তাদের নাতিকে প্রাইভেট পড়ানোর প্রস্তাব দিলে স্ইে প্রস্তাবে স্কুল শিক্ষিকা শাহীনুর পারভীন অপারগতা প্রকাশ করলে মজিদ খন্দকার ও তার স্ত্রী কতৃক জুতাপিটা ও মারধরের শিকার হয়।

এরপর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে ৩০০ শষ্য বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসা শেষে পরদিন ১২ ফেব্রুয়ারী তাকে বাসায় আনা হয়। ঐদিন সকালে শাহীনুর পারভীনের পিতা বাদী হয়ে মজিদ খন্দকার ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। গতকাল সন্ধায় মজিদ খন্দকারকে নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। এ সময় তার স্ত্রী পলাতক ছিল।

হিজড়া বিউটি পার্লার উদ্বোধন করলেন ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হিজড়া জনগোষ্ঠীর একটি বিউটি পার্লার উদ্বোধন করেছেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা পুলিশের সহযোগিতায় শহরের পুরাতন জেলরোডস্থ পুলিশ ভবন মার্কেটে ‘উত্তরণ-৩’ নামে ওই বিউটি পার্লারের উদ্বোধন করেন তিনি। হিজড়ারা এ পার্লার পরিচালনা করবেন।

বিউটি পার্লার উদ্বোধন শেষে ডেপুটি স্পিকার বলেন, সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমরা চাইব সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) উদ্যোগ নেবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সংরক্ষিত নারী সাংসদ ফজিলাতুন-নেছা বাপ্পি, পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি হাবিবুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এসপি মিজানুর রহমান, এএসপি ইকবাল হোসেন ও রেজাউল কবির প্রমুখ। (সূত্র-যুগান্তর)

 

বিকালে খালেদা জিয়ার রায়ের কপি পাবেন আইনজীবীরা

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ের কপি বুধবার বিকালে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।বিষয়টি নিশ্চিত করে বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, সকালে পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামানের আদালতের কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানিয়েছেন কপি তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। বিকাল ৪টা নাগাদ তা আইনজীবীদের দেয়া যাবে। ওই অনুলিপি পাওয়ার পরই বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন করবেন আইনজীবীরা।

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে অনশনে নেতাকর্মীরা

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে পূর্ব ঘোষিত অনশন কর্মসূচি শুরু হয়েছে।

বুধবার সকাল ১০টার আগ থেকেই এ প্রতীকী অনশনে যোগ দিতে প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকেন বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা। কর্মসূচি চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।

অনশনকে ঘিরে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রেসক্লাব ও আশপাশের এলাকায় রয়েছে অন্যদিনের তুলনায় অতিরিক্ত পুলিশ। এ ছাড়া আছে সাদা পোশাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।

অনশন কর্মসূচিতে উপস্থিত রয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, নিতাই রায় চৌধুরী, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জয়নুল আবদীন ফারুক, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, যুগ্ম মহাসচিব বরকতউল্লাহ বুলু, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রফেসর ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাবির অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খানসহ বিএনপি ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ২০ দলের শরিক লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আবদুল করিম, ন্যাপ-ভাসানীর মহাসচিব গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।

ফতুল্লায় নাশকতার মামলায় বিএনপির ১৪ নেতাকর্মীর আগাম জামিন

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় নাশকতার মামলায় বিএনপির ১৪ নেতাকর্মী হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন।মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২ টায় হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও কৃষ্ণা দেবদাথের দ্বৈত বেঞ্চে জামিনের আবেদন করলে আদালত আসামীদের ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন প্রদান করেন।

জামিন প্রাপ্তরা হলেন, জেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন সিকদার, বিএনপি নেতা সেলিম চৌধুরী, আজিজুল হক চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম চৌধুরী, মনোয়ার হোসেন, মাসুদুর রহমান, আব্দুর খালেক টিপু, শরিফুল ইসলাম, সালাহউদ্দিন, নুরুল ইসলাম, মোস্তাফিজ, ইয়াসিন রহমান সুমন, এম ডি ইসমাইল খান, শহিদুল ইসলাম টিটু। আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার জানান, একটি সাজানো মামলায় আসামীদের পক্ষে আদালতে জামিনের আবেদন করলে আদালত ১৪ জনের ৬ সপ্তাহের জামিন প্রদান করেছেন।

অবস্থান কর্মসূচীতে জনতার ঢল : খালেদা জিয়ার শক্তি বেড়েছে: মির্জা আলমগীর

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর কারণে তার শক্তি অনেক বেড়ে গেছে। দেশনেত্রীকে কারাগার থেকে এ দেশের মানুষ অতিসত্বর বের করে আনবো।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সাজানো মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা আলমগীর বলেন, সরকার মনে করেছে- দলের ভেতরে ভাঙন শুরু হবে। নেতাকর্মীর শূণ্যতায় ভুগবে বিএনপি। কিন্তু লক্ষ লক্ষ মানুষ বেগম খালেদা জিয়ার পেছনে রয়েছেন। আগের চেয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা আরো অনেক বেশি শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে জনমানবশূন্য একটি পরিত্যক্ত কারাগারে পাঠানে হয়েছে। সারা দেশে নেতাকর্মীদের নামে প্রচুর মামলা দেয়া হয়েছে। মামলা করা হয়েছে ১৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, এই সরকারের ক্ষমতায় থাকার নৈতিক কোন অধিকার নেই, আগেও ছিল না।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জয়নাল আবদীন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভূইয়া, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ-সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান প্রমুখ।

এছাড়া ২০ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এলডিপির শাহাদত হোসেন সেলিম, ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, এনপিপির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, এনডিপির মঞ্জুর হোসেন ঈশা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান নিরব, পিজিপির আব্দুল মতিন সাউদ প্রমুখ।

পুলিশি বাধার কারণে কয়েক বার অবস্থান কর্মসূচির ভেন্যু পরিবর্তন হয়। প্রথমে প্রেসক্লাব ও পরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে অবস্থান কর্মসূচি হওয়ার কথা থাকলেও অবস্থান কর্মসূচী পালন করতে দেয়নি পুলিশ। পরে তা নয়াপল্টনে অনুষ্ঠিত হয়। অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন, বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা।

জিয়া পরিবার ও বিএনপির দুর্নীতির খন্ড চিত্র

বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায় হিসেবে বিবেচনা করা হয় বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত চার দলীয় জোট সরকারের আমলকে। সেই সময় ক্ষমতার শীর্ষে থাকা ব্যক্তিরা দুর্নীতির মাধ্যমে আয় করা টাকার ভাগ নিতেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, তার দুই পুত্র তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকো’র দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের কারণে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে খুব বাজেভাবে পরিচিতি পেতে হয়েছিল।

দেশে ব্যাপকভাবে দুর্নীতির কারণে টান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের করাপশন পারসেপশন ইনডেক্স (সিপিআই) এ বাংলাদেশে পর পর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্বের মধ্যে প্রথম হয়েছিল। বেগম খালেদা জিয়ার শাসন আমল ছিল সর্বগ্রাসী দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। দুর্নীতি পরায়ন এই সরকারের শাসনামলে খুব একটা প্রকাশিত না হলেও ২০০৭-০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দুর্নীতিকে বিএনপির প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া এবং সার্বিক সমর্থন দেওয়ার খবর প্রকাশিত হতে থাকলে খালেদা জিয়া, তার দুই ছেলে ও অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়। ওই সময়েই তাদের দুর্নীতির জন্য তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয় যা এখন বিচারাধীন রয়েছে। এই প্রবন্ধে বেগম খালেদা জিয়া এবং তার দুই পুত্রের আলোচিত দুর্নীতি মামলা নিয়ে আলোচনা করা হবে।

 কোকোর সিমেন্সের দুর্নীতি কেলেঙ্কারী:

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে ঘুষ দেওয়ার কথা স্বীকার করে সিমেন্স। বিভিন্ন অভিযোগ ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে মার্কিন জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট  আরাফাত রহমান কোকোর কয়েকটি ব্যাংক হিসাবের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ৮ জানুয়ারি সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের মামলা করে যা নম্বর 1:09-cv-00021(JDB)। এই ব্যাংক হিসাবগুলোতে ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার গচ্ছিত ছিল। আরাফাত রহমান কোকো সিমেন্স এবং চাইনা হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাছ থেকে তার অ্যাকাউন্টে ঘুষ হিসেবে নিয়েছিল ওই টাকা। মার্কিন বিচার বিভাগ কোকোর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বায়েজাপ্ত করার মামলা করেছিল কারণ তার সিঙ্গাপুরের ব্যাংক অ্যাকউন্টের কিছু টাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছিল। কোকোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মার্কিন ডলারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকেই তার ঘুষের টাকা পরিশোধ করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যবহার করে বিদেশ থেকে ঘুষ ও জোরপুর্বক টাকা আদায় করলে তা যুক্তরাষ্ট্রের মানি লন্ডারিং আইনের আওতায় পড়ে । তার মামলার বিষয়টি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, তার অ্যাকাউন্টের লেনদেন হয়েছে বিদেশে বসে এবং ঘুষ ও জবরদস্তিমূলকভাবেই তিনি ওই অর্থ নিয়েছিলেন।  যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রে কোকোর ওই অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল তাই বাংলাদেশ  এবং যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে কোকোর মানি সিমেন্স ঘুষ কেলেঙ্কারী নিয়ে কাজ করে। কোকো জাসজ (ZASZ) নামে একটি সিঙ্গাপুরে একটি কোম্পানীর নামে তার ঘুষের অর্থ রেখেছিল যা তার পরিবারের সদস্যদের অদ্যাক্ষর নিয়ে গঠিত। ( যাফরিয়া কোকোর বড় মেয়ে, আরাফাত রহমান কোকো নিজে, কোকোর স্ত্রী শর্মিলা এবং জাহিয়া কোকোর ছোট মেয়ে এই চার জনের নামের অদ্যাক্ষর নিয়ে জাসজ নামের কোম্পানীটি গঠিত হয়েছিল।) আরাফাত রহমান কোকো ঘুষের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরে বিপুল পরিমাণে অর্থ জমা করেছিল, এমন প্রমাণ পাওয়ার পর সেদেশের সরকার ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সরকারকে ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ফেরত দিয়েছিল। এর আগে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনকারী হিসেবে আরাফাত রহমান কোকোকে বাংলাদেশের একটি আদালত ২০১১ সালে ৬ বছরের জেল দিয়েছিল। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর সিঙ্গাপুরে ফেয়ারহিল নামে একটি কোম্পানীর মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের মামলায় তাকে আরো ৫.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার জরিমানা গুনতে হয়েছিল।

তারেক ও মামুনের মানি লন্ডারিং দুর্নীতি:

মার্কিন ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-এফবিআই বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী  বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার ঘনিষ্ট বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে  ঘুষ ও মানি লন্ডারিং নিয়ে  তদন্ত করেছে এবং বাংলাদেশের আদালতে তাদের বিরুদ্ধে এসে  সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন এফবিআইয়ের সাবেক বিশেষ প্রতিনিধি। এফবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে যে, তারেক ও মামুন তাদের সিঙ্গাপুরের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নির্মান কনস্ট্রাকশন লিমিটেড এর পরিচালক এবং চীনের হারবিন ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন এর এদেশীয় এজেন্ট খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে সাড়ে ৭ লাখ মার্কিন ডলার ঘুষ নিয়েছিল। হারবিন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানীর লোকাল এজেন্ট হিসেবে টঙ্গীতে ৮০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মানের কাজ পাওয়ার  জন্য তারেক ও মামুনকে ওই টাকা দিয়েছিল ঘুষ হিসেবে। এফবিআইয়ের এজেন্ট ডেব্রা লাপ্রিভেট গ্রিফিথ এই বিষয়ে তারেক  ও মামুনের দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশের আদালতের সামনে সাক্ষ্য দেন যে, ব্যবসায়ী খাদিজা ইসলাম সিঙ্গাপুরে মামুনের সিটি ব্যাংকে (তারেকের বন্ধু মামুনের সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বার: ১৫৮০৫২-০১৬-০০৮) ওই টাকা জমা দিয়েছিলেন। ওই একই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে তারেক রহমানের নামে সাপ্লিমেন্টারি গোল্ড ভিসা কার্ড ( যার নাম্বার: ৪৫৬৮-৮১৭০-১০০৬-৪১২২) ইস্যু করা হয়। সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংকের কাছ থেকে সাপ্লিমেন্টারি গোল্ড ভিসা কার্ড নিতে তারেক রহমান তার পাসপোর্টের একটি ফটো কপি জমা দিয়েছিল ( তারেক রহমানের পাসপোর্ট নাম্বার: Y ০০৮৫৪৮৩) যেখানে তার পিতার নামের জায়গাতে লেখা ছিল মৃত জিয়াউর রহমান এবং মাতার নাম ছিল বেগম খালেদা জিয়া। তারেক রহমান এই কার্ড বিভিন্ন দেশে যেমন; গ্রিস, জার্মানী, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রমোদ ভ্রমণের জন্য ব্যবহার করেছিল এমন তথ্যই উঠে এসেছে এফবিআইয়ের তদন্তে। এভাবে মোয়াজ্জেম হোসাইন এবং মারিনা জামান ঘুষের টাকা মামুনের সিঙ্গাপুরের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দিয়েছিল যে অ্যাকাউন্টে তারেক রহমানের সরাসরি  ছিল। ২১ জুলাই ২০১৬ সালে বাংলাদেশের উচ্চ আদালত তারেক রহমানকে সাত বছরের জেল এবং ২০ কোটি টাকা জরিমানা করেছে মানি লন্ডারিং এর জন্য। দেশের সর্বোচ্চ আদালত শুধু রায়ই দেননি তখন রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল যে, এ ধরনের অপরাধমূলক কাজ ‘ ফিনানশিয়াল ক্রাইম’ ছিল এবং এ ধরনের কাজ দেশের অর্থনৈতিক  উন্নয়নের জন্য বড় ধরনের একটি বাধা। মামুনের অ্যাকাউন্টে খাদিজা ইসলামের দেয়া ৭ লাখ ৫০  হাজার ডলারে খোঁজ  পেয়ে সুপ্রীম কোর্ট তারেক সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন ওই টাকাটা ঘুষের টাকা। কিন্তু তারেক রহমান এবং তার বন্ধু মামুন ওই টাকাকে পরামর্শক ফি হিসেবে নিয়েছে।

নাইকো দুর্নীতি কেলেঙ্কারী:

২০১১ সালেল ২৩ জুন কানাডার একটি আদালত বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তার সরকারের জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসাইনের দুর্নীতি মামলার বিষয়ে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ পেয়েছিল। মোশাররফ কানাডার কোম্পানী নাইকোকে অনৈতিকভাবে সুবিধা দেয়ার বিনিময়ে একটি দামি গাড়ি উপহার পেয়েছিল নাইকোর কাছ থেকে যার আর্থিক মূল্য ছিল কানাডিয়ান ডলারে ১,৯০,৯৮৪ ডলার। নাইকো আরো ৫ হাজার কানাডিয়ান ডলার ঘুষ দিয়েছিল মোশাররফকে তার স্বপরিবারে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের জন্য। আর নাইকো একেএম মোশাররফ হোসাইনকে ওই ঘুষ দিয়েছিল এটা নিশ্চিত করতে যে, নাইকো বাংলাদেশ থেকে তাদের ঠিক করা দামে গ্যাস কিনতে পারবে এবং তা বিক্রী করতে পারবে এবং গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরনের কারণে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত জরিমানা আরো কমানো হবে।। ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট রিট পিটিশনের ( পিটিশন নাম্বার: ৫৬৭৩) রায় দেয়। রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ, এফবিআই এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের সমস্ত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালত এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, ২০০৩-০৬ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ খালেদা জিয়ার প্রধানমন্ত্রীত্বকালীন সময়ে নাইকোর কাছ থেকে বড় ধরনের ঘুষ লেনদেনের ঘটনা ঘটেছিল অনৈতিকভাবে তাদের সুবিধা দেয়ার নামে। বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আদেশের লক্ষণীয় বিষয় হলো, নাইকো একেবারে নির্লজ্জভাবে ঘুষ দিয়েছিল। নাইকোর এজেন্ট কাশিম শরীফকে ৪ মিলিয়ন ডলার দিয়েছিল এবং ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভুইয়ার মাধ্যমে ৫ লাখ ডলার দিয়েছিল। আর নাইকো তাদেরকে পরামর্শক হিসেবে এইসব টাকা দিয়েছিল যা তৎকালীন সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্তাদের প্রদান করতে এবং তাদের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন। আর এইসব সকল তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করেছে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। তাদের তথ্যপ্রমাণ এটাই প্রমাণ করে যে, নাইকো তাদের বাংলাদেশী এজেন্টদেরকে সুইস ব্যাংকের মাধ্যমে প্রথমে বার্বাডোজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কাশিম শরিফ এবং সেলিম ভুইয়ার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকাগুলো দেন। পরে ওই টাকা চলে যায় তারেকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের অ্যাকাউন্টে।

জিয়া পরিবারের দুর্নীতি নিয়ে এফবিআইয়ের বিশেষ প্রতিনিধির সাক্ষ্যঃ

বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন -এফবিআই’য়ের সাবেক বিশেষ প্রতিনিধি ডেবরা লাপ্রিভেট গ্রিফিথ কয়েক বছর দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করেছেন। বাংলাদেশে ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সময় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় কিভাবে দুর্নীতি হয়েছিল তা নিয়েই মূলত তিনি তদন্ত করেছেন। ২০১৬ সালের ২১ নভেম্বর আদালতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে এবং বিএনপির দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা তারেক রহমান এবং তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে তিনি যে জবানবন্দী দিয়েছেন সেখানে তিনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং জিয়া পরিবার নিয়ে বাস্তবতার নিরীখে কিছু মন্তব্য করেন। সেই সময়ের সরকার এবং জিয়ার পরিবারের ঔদ্ধত্যের কারণে কিভাবে তখন দেশে সর্বগ্রাসী দুর্নীতি হয়েছিল তা তিনি তুলে ধরেন। এখানে গ্রিফিথের করা কিছু মন্তব্য কোন প্রকার সম্পাদনা ছাড়াই আক্ষরিকভাবে তুলে ধরছি।

কিছু “পরামর্শক” এর মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়া হয়েছিলো যারা টাকাটা ঐসকল সরকারি কর্মকর্তা ও তাদের প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের কাছে পৌছে দেন। গিয়াসউদ্দিন আল মামুন ও তার ভাই হাফিজ ইব্রাহিম, এই দুইজনই মুলত তারেক রহমান ও মন্ত্রনালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ন ক্ষমতাসীনদের প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের কাছে টাকা স্থানান্তর করে। যারা পরে নিজেদের রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে ঘুষ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেয়। বাংলাদেশ কাজ করতে ইচ্ছুক এমন অনেক প্রতিষ্ঠান এধরনের মধ্যস্ততাকারীদের পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দিতো যাদের আসলে টেলিযোগাযোগ, জলবিদ্যুৎ, তেল বা গ্যাস এধরনের ক্ষেত্রে কোন বিশেষ জ্ঞান নেই। ক্ষমতাশালী লোকদের সাথে তাদের সুসম্পর্ককে  ব্যবহার করেই ঘুষ প্রদান করতো।

কয়েকজন আমার কাছে এই বলে সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, বাংলাদেশে যে কোন ধরনের কাজের চুক্তি পেতে হলে প্রতিষ্ঠানটিকে মামুন বা তার ভাই হাফিজ ইব্রাহিমকে টাকা দিতে হতো যারা পরে সেই টাকা প্রধানমন্ত্রীর দুই ছেলে তারেক ও কোকোর কাছে পৌঁছে দিতো। আমরা যতগুলো দুর্নীতির মামলার তদন্ত করেছি প্রতিটি তদন্তই একথা সমর্থন করে, এবং আরো প্রমাণ বের হয় যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী এমনকি নিচুপদস্থ অনেক সরকারী কর্মকর্তারাও ঘুষের টাকা পেতেন।

উদাহরস্বরুপ, সিমেন্স দুর্নীতি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সিঙ্গাপুরে আরাফাত রহমানের ঘুষের ব্যাপারে সেদেশের তদন্ত কর্মকর্তারা একটি অফিসে তল্লাশী চালান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের ওয়ারিদ টেলিকমের আরাফাত রহমানকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে একটি ‘পরামর্শক চুক্তি’র কাগজ খুজে পান। আরাফাত রহমানের টেলিকম খাতে কোন দক্ষতা বা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কোন প্রমাণ নেই এবং পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার যোগ্যতাও তার নেই। আরাফাত রহমান আরব আমিরাতে বাড়ি কেনেন এবং আরব আমিরাত থেকে টাকা তার সিঙ্গাপুরের একাউন্টে টাকা জমা করার তথ্য আমার তদন্তে উঠে আসে।

তারেক রহমান সম্পর্কে উইকিলিকস যা বলেছিল:

ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস ২০০৮ সালের ৩ নভেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টে  এক গোপন তারবার্তায় তারকে রহমান সম্পর্কে লেখেন। যা পরে সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী উইকিলিকসের ফাঁস করা নথিতে পাওয়া যায়। মরিয়ার্টি তারেক রহমান সম্পর্কে লিখেন:

“তারেক রহমান বিপুল পরিমাণ দুর্নীতির জন্য দায়ী যা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলছে…

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান অত্যন্ত দুর্ধর্ষ ও ভয়ঙ্কর এবং একটি দুর্নীতিপরায়ণ সরকার ও বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতার প্রতীক।

তারেক রহমানের প্রকাশ্য দুর্নীতি মার্কিন সরকারের তিনটি লক্ষ্যকে, যথাঃ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, উন্নয়ন এবং জঙ্গিবাদ নির্মুল করার মিশনকে প্রচণ্ডভাবে হুমকির সম্মুখীন করেছে…… আইনের প্রতি তার প্রকাশ্য অশ্রদ্ধা বাংলাদেশে জঙ্গিদের মূল শক্ত করতে সহায়তা করেছে”

জিয়া পরিবারের অন্যান্য দুর্নীতির মামলা যেগুলো বিচারাধীন রয়েছে:

যেসব মামলায় জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে সেই মামলার বাইরেও জিয়ার পরিবারের বেগম খালেদা জিয়া,তার পুত্র তারেক রহমান এবং বিএনপির অন্য শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা বিচারাধীন রয়েছে। আর ওই সব মামলাগুলো বিগত ২০০৭-০৮ সালের  তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে দুর্নীতি দম কমিশন করেছিল। এর একটি মামলাও বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা হয়নি।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাঃ ২০১১ সালের ৮ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশন তেজগাঁও থানায় এই মামলা করে। জিয়াউর রহমানের নামে একটি চ্যারিটেবল ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করে ৩ কোটি ১৫ লক্ষ টাকার বেআইনি লেনদেনের কারণে এই মামলা করা হয়। খালেদা জিয়াসহ চার জনকে আসামী করে চার্জশীট প্রদান করা হয়।

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাঃ ২০০৮ সালের ৩ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন রমনা থানায় খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক রহমান ও আরো চারজনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করে। অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্তরা অরফানেজ ট্রাস্টের নামে দেশের এতিমদের জন্য বিদেশি দাতা সংস্থা থেকে আসা ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকার অনুদান আত্মসাৎ করে। ২০১০ সালের ৫ আগস্ট কোর্টে চার্জশীট দাখিল করা হয়। মামলার কাজ শেষ হয়েছে এবং ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে রায় ঘোষনার কথা রয়েছে।

বড়পুকুরিয়া দুর্নীতি মামলাঃ ২০০৮ সালের ২৬ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন শাহবাগ থানায় খালেদা জিয়াসহ ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে এই মামলা দায়ের করে। মামলায় বলা হয়, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে কন্ট্রাক্টর নিয়োগের ব্যাপারে অভিযুক্তরা দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন এবং প্রায় ১৫৯ কোটি টাকা ঘুষ হিসেবে আদায় করেছেন। মামলাটি এখন ঢাকা জজকোর্টে প্রক্রিয়াধীন আছে। খালেদা জিয়া এই মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট বিভাগে আবেদন করেন যা ২০১৬ সালের ২৫ মে আদালত খারিজ করে দেন। মামলার প্রক্রিয়া চলতে এখন আর কোন বাধা রইলো না।

গ্যাটকো দুর্নীতি মামলাঃ ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন খালেদা জিয়াসহ আরো ১৪ জনের নামে এই মামলা দায়ের করে। মামলায় বলা হয় চট্টগ্রাম বন্দর ও ঢাকা ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোর কন্টেইনার ওঠানামার কাজ গ্যাটকোকে দেওয়ার ফলে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের ১৪৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। খালেদা জিয়া দুই দফায় এই মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেন যা আদালতে খারিজ হয়ে যায়। বর্তমানে অভিযোগপত্র দাখিলের অপেক্ষায় আছে মামলাটি।

নাইকো দুর্নীতি মামলাঃ ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন খালেদা জিয়াসহ আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করে। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ এগারো জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করে। খালেদা জিয়া মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। ২০১৫ সালের ১৮ই জুন হাইকোর্ট এই আবেদন খারিজ করে দিলে খালেদা জিয়া সুপ্রিম কোর্টের আপিল ডিভিশনে লিভ টু আপিলের আবেদন করেন। ২০১৬ সালের ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার এই আবেদন খারিজ করে দেয় এবং বিচারিক আদালতকে মামলার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে আদেশ দেয়। মামলার চার্জ গঠনের শুনানির কাজ এখন প্রক্রিয়াধীন।

মানববন্ধনে জনতার ঢল: খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না ২০ দল: মির্জা আলমগীর

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।

সোমবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে `ভিত্তিহীন বানোয়াট’ মামলায় সাজা প্রদানের প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে তার নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে ঢাকাসহ সারাদেশে মানববন্ধন কর্মসূচী পালনকালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন। মানববন্ধনে নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছিল।

মানবন্ধনে দলের মহাসচিব ও জোটের সমন্বয়ক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার মিথ্যা ও সাজানো মামলায় সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়েছে। তাই খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাবো না।

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে থাকেবেন আর দেশে ভোট হবে, এমনটি হবে না। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে তাঁকে মুক্ত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হবে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বর্তমান সরাকার চায়, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো একটা ভোটারবিহীন নির্বাচন করতে। কিন্তু দেশে আর কোনো একতরফা ভোট করতে দেয়া হবে না।

মির্জা আলমগীর বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্ত না হবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত জনগণের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন থামানো যাবে না। তাই আর কোনো কালক্ষেপণ না করে অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে।

প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে সচিবালয়ের মোড় এবং কদম ফোয়ারে মোড় পর্যন্ত কয়েক লাইনে বিভক্ত হয়ে নেতাকর্মীরা সারিবদ্ধভাবে মানববন্ধনে দাঁড়ান। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কর্মসূচির নির্ধারিত সময়ের আগেই সকাল ১০টা থেকে মানববন্ধনে দলটির নেতাকর্মীরা অবস্থান নিতে শুরু করেন।

বেলা ১১টার দিকে প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে হাজার হাজার নেতাকর্মী জড়ো হন। নেতকর্মীদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে প্রেসক্লাব চত্বর। পূর্বঘোষিত মানববন্ধনে বিএনপি ছাড়া বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন, বিশ দলীয় জোট, পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, মোহাম্মদ শাহজাহান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ডা. এজেএম জাহিদ হোসেন, বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম, ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক ডা. রফিকুল কবির লাবু, জয়নাল আবদীন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আমিনুল হক, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, মুহাম্মদ আবদুল আউয়াল খান, ড. মোর্শেদ হাসান খান, শহীদুল ইসলাম বাবুল, হারুনুর রশিদ, শামীমুর রহমান শামীম, কাদের গণি চৌধুরী, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, নিপুন রায়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, তানভীর আহমেদ রবিন, যুবদলের সাইফুল আলম নীরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিউল বারী বাবু, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান, ছাত্রদলের মামুনুর রশিদ মামুন, আলমগীর হাসান সোহান, নাজমুল হাসান, আবু আতিক আল হাসান মিন্টু, ইখতিয়ার রহমান কবির, জহিরুল ইসলাম বিপ্লব, আরজ আলী শান্ত, রাজিব আহসান চৌধুরী পাপ্পু, সহ ছাত্রদল, যুবদল, মহিলা দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল, মৎস্যজীবী দল, তাঁতী দল ও ঢাকা মহানগীরর নেতাকর্মীরা মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।

এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদাদলের আহ্বায়ক ড. মো: আখতার হোসেন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো: আবদুর রশিদ ও অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানের নেতৃত্বে সাদাদলের অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন, ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. মহব্বত খান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, ড. মাহফুজুর রহমান, ড. মামুন আহমেদ, অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন, ড. মহিউদ্দিন আহমেদ, ড. আল মোজাদ্দেদী আলফেছানী, ড. মিজানুর রহমান, ইসরাফিল প্রামাণিক রতন, অধ্যাপক অনুপম সেন, অধ্যাপক দেবশীষ পাল, অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন, অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী, অধ্যাপক আলামিন, ড. এহসানুল মাহবুব যোবায়ের, অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক জসিম উদ্দিন, মো: আনোয়ার হোসেন, মো: নূরুল আমিন প্রমুখ মানববন্ধনে অংশ নেন।

এদিকে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারাও মানববন্ধনে অংশ নেন। তাদের মধ্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়াসহ জোটের নেতারা এই কর্মসূচির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন।

এদিকে মানববন্ধনকে ঘিরে প্রেসক্লাবের সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতিও লক্ষ্য করা গেছে।

ফতুল্লায় শিক্ষিকা মারধরের অভিযোগে জাপা নেতা মজিদ গ্রেফতার

একজন স্কুল শিক্ষিকাকে বাড়িতে ঢুকে মারধর ও জুতাপেটা সহ লাঞ্ছনার অভিযোগে জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব আবদুল মজিদ খন্দকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নির্যাতিতা শিক্ষিকা শাহীনূর পারভীনের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায়। তিনি হাজীগঞ্জ এলাকার প্যাসিফিক ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় মজিদ খন্দকারকে ফতুল্লার হাজীগঞ্জের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে দুপুরে শিক্ষিকার বাবা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।

নির্যাতনের পরে রোববার রাতে শাহীনূর পারভীনকে শহরের খানপুরে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখান থেকে সোমবার সকালে তাকে সদর উপজেলার হাজীগঞ্জের ভাড়া বাড়িতে নেওয়া হয়। সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) শরফুদ্দিন ওই শিক্ষিকার বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন।

নির্মম এ ঘটনার শিকার শাহীনূর পারভীন শানু এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ওই স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। স্থানীয় আইনজীবি ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার মো: নুরুল হুদার বাড়িতে পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকেন তিনি। তার দুই ছেলে মেয়ে।

শাহীনূর পারভীন শানু জানান, একই এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালী জাতীয় পার্টি নেতা ও আইনজীবী আবদুল মজিদ খন্দকার রোববার রাত ১০টার দিকে স্ত্রীকে সাথে নিয়ে তার বাসায় এসে তাদের নাতনিকে বাসায় গিয়ে পড়ানোর প্রস্তাব দেন। দীর্ঘ ছয় মাস যাবত কিডনীজনিত রোগে অসুস্থতার কারণে তাদের এ প্রস্তাব তিনি ফিরিয়ে দেন শানু। আর এ অপরাধে ওই আইনজীবি ও তার স্ত্রী প্রথমে তাকে মৌখিকভাবে হুমকি দেন এবং এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে নাবালক ছেলে মেয়ে ও স্বজনদের সামনেই তাকে মারধর করতে থাকেন। গলায় চাপ দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। পায়ের জুতা খুলে তাকে জুতাপেটাও করেন।

শাহীনূরের মা রাবেয়া ইসলাম জানান, তার মেয়ে শাহীনূর পারভীন শানু দীর্ঘ ছয় মাস যাবত কিডনিজনিত রোগে ভুগছেন। এ কারনে প্রাইভেট পড়ানো ছেড়ে দিয়েছেন।

বাড়ির মালিক ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার অ্যাডভোকেট নূরুল হুদা এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তিনি একজন আইনজীবি তেমনি আমিও একজন আইনজীবি। আমার অনুমতি ছাড়া আমার বাড়িতে ঢুকে আমার ভাড়াটের গায়ে হাত তোলা ও জুতাপেটা করা দন্ডনীয় সামাজিক অপরাধ করেছেন। তার উচিত ছিল আগে আমার সাথে কথা বলা। কিন্তু তিনি সেটা না করে চরম অপরাধ করেছেন। একজন আইনজীবির দ্বারা এ রকম বেআইনী কাজ করে তিনি নিন্দিত হয়েছেন।

জাপা নেতা অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ খন্দকার বলেন, অমি আর আমার স্ত্রী আমাদের নাতনিকে বাসায় পড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছি। সে পড়াবে না ভালো কথা। কিন্তু আমাদের মুখের উপর না করে দিল। আমাদের অপমান করল। তাই অপমানের বদলে তাকে অপমান করা হয়েছে।

হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তাহমিনা নাজনীন জানান, শাহীনূরের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্নসহ তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার আলামত পাওয়া গেছে। হাসপাতালে আনার পর তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

ফতুল্লা মডেল থানার ওসি কামাল উদ্দিন জানান, সোমবার দুপুরে শাহীনূর পারভীনের বাবা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে আবদুল মজিদ খন্দকার ও তার স্ত্রী রোকেয়া খন্দকারকে আসামী করে মামলা করেছে। সন্ধ্যায় মজিদ খন্দকারকে হাজীগঞ্জের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বক্তাবলীর আল আমিন ইকবালের এভারশাইন গ্রুপের দুর্নীতি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল:

সামান্য নির্মাণ শ্রমিক থেকে হঠাৎ কোটিপতি বনে যাওয়া বক্তাবলী এলাকার রামনগর গ্রামরে মো. আল-আমিন ইকবারের মালিকানাধীন এভারশাইন বহুমূখী সমবায় সমিতি তথা এভারশাইন গ্রুপের দুর্নীতির রিপোর্টটি প্রকাশিত হলো সিঙ্গপুরের জাতীয় দৈনিক “দ্য স্ট্রইেট টাইমস” বাংলার কণ্ঠ,অনলাইন পত্রিকা বজ্রকণ্ঠ‘ বাংলাদেশের বাংলা নিউজ২৪ ডট কমসহ আরো অন্যান্য অনলাইন পত্রিকায়। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশতি রির্পোট অবলম্বনে মো. আল আমিন ইকবালের দুর্নীতির বিস্তারিত পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল।


# সিঙ্গপুরে বহুমুখী কোম্পানির মোহময় জালে শত শত শ্রমজীবী প্রবাসী ‘বাংলার কণ্ঠ পত্রিকায়,
# সিঙ্গাপুরের হাওয়ায় এখন বাংলাদেশী প্রতারণার গুঞ্জরণ বজ্রকণ্ঠ পত্রিকায়”ঢাকায় ‘সিঙ্গাপুর সিটি’ দেখিয়ে লিটন   ইন্ডিয়ায় প্রতারণা বাংলা নিউজ ২৪ ডট কম অনলাইন পত্রিকায়,
# বাংলাদেশী শ্রমিকরা তাদরে বিনিয়োগ নিয়ে দুশ্চিতায়’ দ্য স্ট্রইেট টাইমস পত্রকিায় র্শীষক রির্পোট গুলো প্রকাশ করার জন্য অশষে ধন্যবাদ।

সিঙ্গপুরে কর্মরত  শ্রমজীবী বাংলাদেশীর বিভিন্ন মৌলকি সমস্যা যেমন, খাবার, বাসস্থান,কর্মক্ষেত্রে বেতন-বিবাদসহ এজন্টে কর্তৃক প্রতারণা, চাকরি দেয়ার নামে হয়রানি নিয়ে বিভিন্ন রকম তথ্যমূলক অনুসন্ধানী রির্পোট যেমন প্রকাশ করেছে তেমনি প্রবাসীদরে স্বার্থে সংশ্লিষ্ট বিষয় সমূহে হাই কমিশনের উদাসীনতা, অবৈধ হুন্ডি,স্বর্ণ চোরাচালান, প্রবাসীদরে পাসর্পোট নিয়ে হয়রায়নিসহ সিঙ্গপুরের আইন কানুন সংক্রান্ত বিভিন্ন সচতেনতা মূলক বিষয় গুলোতওে আলোকপাত করেছে কোন রকম পক্ষ অবলম্বন না করইে। এরই ধারাবাহকিতায় নতুন বছররে সংযোজন প্রবাসীদের নিয়ে সমবায় সমতিরি প্রতারণা একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে তাতে সন্দেহ নেই। আমরা প্রবাসীরা ঘাটে পথে মরি। যখন বিদেশে আসার স্বপ্ন দেখি তখন দেশের এজেন্ট, রিক্রুটিং এজেন্সি ট্রেনিং সেন্টারও স্বপ্ন দেখায় এবং বিদেশে আসার পরে নিয়োগকর্তা, কর্মক্ষেত্রের র্ঊধ্বতন, অধঃস্তন থেকে শুরু করে এদেশে আগে যারা এসেছে অর্থাৎ একটু সিনিয়র পর্যায়ের বড়ভাই, বন্ধু, কমিনিউটির কতিপয় হঠকারী ব্যক্তিবর্গসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে শুরু হয় স্বপ্ন দেখা আর ভাঙার মহোৎসব। এরই মধ্যে ঘামের নোনা জলে তিল তিল করে সঞ্চিতঅর্থে চোখ পড়ে কখনও জাতি কখনও বিজাতীয় বন্ধুরূপী প্রতারকদের। তাদের গাড়ী-বাড়ী বিশালবহুল  জীবন হাতছানি দেয়, আবার পর্বত প্রমাণ স্বপ্ন পূরণরে আশ্বাসে তাদের কথার মিষ্টত্ব এড়াতে না পরেে আমরাও বলি হই লোভের  যুপকাষ্ঠে। ঠিক এমনটইি ঘঠেছিল‘এভারশাইন (ইশা) বহুমুখী সমবায় সমিতি বা এভারশাইন গ্রুপের ক্ষেত্রেও। এখানে বিশ্বাসটা কাজ করেছিল অন্য রকমভাবে। একদিকে দেশি তারপরে আবার সে আমাদরেই মতো একজন সাধারণ প্রবাসী শ্রমিক হয়ে বিলাসী জীবন যাপন করেছে দেখে অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠে।প্রবাসের কষ্টাজির্ত উর্পাজনের বিনিময়ে যদি দেশে একটু করে জমি কিংবা ফ্লাট,গাড়ী কোম্পানির পরচিালকের পদ লাভ করা যায়, তাদের মত সু̈ট টাই পরে ঘোরা যায়, প্রবাসে উচ্চ মূল্য দিয়ে নিজের শ্রম কিনে এসে গায়ে সেঁটে থাকা শ্রমিক নামের তকমা থেকে মুক্ত হওয়া যায়,তাতে ক্ষতিকি?কথায় বলে না ‘অতি লোভে তাঁতী নষ্ট’ আমাদরেও হয়েছে সেই অব̄স্থা। মাসে মাসে বাড়িতে কম টাকা পাঠিয়ে একবেলা খেয়ে না খেয়ে সমিতির সদস্য হয়েছি প্রতি মাসে বেতন পেয়ে সবার আগে সমিতির মাসিক কিস্তির টাকাটা সমিতির পরিচালকদের হাতে সযত্বে তুলে দিয়েছি লোভনীয় প্রস্তাবে আকষ্ট হয়ে। আবার কেউ কেউ ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে কোম্পানির নাম সর্বস্ব পরচিালক হয়েছি তাদের কথায়।


বিশ্বাস করে বাজার মূল্য থেকে বহু গুণ উচ্চ মূলে কাজীর গরুকেতাবে থাকা জমি ফ্লাটের বুকিং দিয়েছি আর বিনিময়ে রক্ত পানি করা টাকা দিয়ে বাহারী রঙে ছাপানো কাল্পনিক সুদৃশ অট্টালিকার ছবি সম্বলিত দিস্তা দিস্তা কাগজ কিনেছি। র্দীঘ সময় পার করার পরে বোধোদয় হয়েছে আমাদরে সকলরেই। আমরা বাংলাদেশীরা নিজেদের যতই চালাক ভাবি না কেন আসলেই আমরা বোকা, লাভের লোভ দেখিয়ে আমাদরে মত প্রবাসীদরে সহজইে কিনে নেয়া যায়। এতো গেল আমাদরে কথা। এবার আসি আমাদের জাতি যারা আমাদের সাথে বছররে পর বছর ধরে এতবড় পরিকল্পিত প্রতারণাকরেছে তাদের কথায়। যখন আমাদের সদস্য করা হলো তখন কিমিষ্টি মিষ্টি কথা,যেন চিনি ছাড়াই শরবত বানানো যাবে। আর তাদের বিশ্বাস করবোই বা না কেন? যখন দেখেছি সাবেক হাই কমিশনার, সেখানকার কর্মকর্তাবৃন্দ,বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ, পি আর সিটিজেন, ব্যবসায়ী সংগঠনের বড় বড় মাথারা বিভিন্ন সময়ে তাদের অনুষ্ঠান গুলোতে আসন অলংকৃত করছেন, এধরনের উদ্যোগ গুলোকে জানাচ্ছেন,আমাদের উৎসাহিত করছেন। অথচ যখন অঘটন ঘটলো তখন আর কাউকেই পাশে খুঁজে পাওয়া গেল না। ভাবতেও অবাক লাগে এত এত বিজ্ঞজনেরা বছররে পর বছর ধরে এই প্রতারক সিন্ডিকেটের সাংস্কৃতকি ও ধর্মীয় মোড়কে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আতিথেয়তা গ্রহণ করেছেন। তাদের কেউ কি একবারও ভাবেনি আয়োজকরা তাদের হীনউদ্দেশ্য সাধনে নিপুনভাবে আমন্ত্রিত অতিথিদের ব্যবহার করেছে, তাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে আমাদের মতো শত শত শ্রমিকদের হাড় ভাঙা শ্রেমের অর্থে নিজস্ব ব্যবসার পরিধি বাড়াচ্ছে, মিলাদ মাহফিল আর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের নামে সাধারনের আইওয়াশ করছেন? জানা মতে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশী কমিউনিটির বিভিন্ন ব্যক্তিদের কাছে প্রতারিত ভুক্তভোগীরা উল্লিখিত সমিতির প্রতারণা, তাদের টাকা ফিরে পাওয়ার সহযোগিতা চেয়ে আকুতি জানিয়েছন কিন্তু বলাই বাহুল ̈ তারা এই ব্যাপারে সান্তনা দেওয়াতো দূরের কথা কেউ কেউ কোন প্রতিক্রিয়াই দেখাননি।

এখানেই শেষ নয়, রিপোর্টটি প্রকাশিত হওয়ার পরে শুনেছি যারা মুখ খুলেছেন তাদেরকে দেশে এবং সিঙ্গাপুরেও বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দেয় হচ্ছে। এমনকি যাদেরকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে উক্ত কোম্পানিতে অর্থের বিনিময়ে পরিচালক করে পদ দিয়ে সমিতির শেয়ারধারী করা হয়েছে, তাদেরকেও বিভিন্নভাবে ভয় দেখানো হচ্ছে যে,কোম্পানির সকল দায়-দায়িত্ব উদ্যোক্তাদরে সাথে তাদেরও নিতে হবে। বাস্তবে কোম্পানির অর্থ কোথায় কি করা হয়েছে পরচিালকদের কেউই অবগত নন। নাম সবস্ব পরিচালক বানিয়ে মূল উদ্যোক্তাদরে অপরাধের দায়ভার পরিচালক ও বিনিয়োগকারী হিসেবে সাধারণ সদস্যদের উপরচাপিয়ে মিথ্যে ভয় দেখানো হচ্ছে যাতে তারা কোথাও মুখনা খোলেন। এই বিদেশ-বিভূইয়ে একজন স্বদেশি হিসেবে আরেকজন স্বদেশি কাছে বিপদে সাহায্য পাওয়ারই তো কথা ছিল। যাই হোক দেরিতে হলওে বাংলার কণ্ঠসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পত্রিকায় রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে এজন্য একটু ভাল লাগছে কিছুটা ভরসাও পাচ্ছি। টাকা কবে পাব, কিংবা আদৌ আমাদের ভাগ্যের সিঁকে ছি‍ঁড়বে কি না সেটা অনিশ্চিত হলেও রিপোর্টটি পড়ে অন্তত কয়েকজন প্রবাসীও তো ভবষ্যিতে এরকম প্রতারণায় জড়ানোর আগে দুবার ভাববেন আবার যারা এ ধরণরে প্রতারণার জাল বিছিয়েএগোবে তারাও একবার হলওে ভাববে এখানেই আপাতত স্বস্তি খোঁজার চেষ্ঠা করছি।

তবে বিদেশে বসে এধরনের প্রতারণাকরে কেউ পার পেয়ে গেলে তার দায় অনেকটা অলিখিতভাবেই বিদেশে আমাদের দেখভাল করার একমাত্র অভিভাবক হাইকমিশন, কমউিনিউটির বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের উপরেই বর্তায়,সেটা তারা সজ্ঞানে ঘটনা সর্ম্পকে অবহিত থাকুন বা নাই থাকুন। তাই এখানকার হাই কমিশন ও ব্যবসায়ী সংগঠনসহ কমিনিউটিন নেতৃত্ব স্থায়ীদের কাছে আমাদের আকুল আবেদন বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশকে যারা এভাবে ডোবাচ্ছে তাদের কোনো প্রকার প্রশ্রয় নয়, যারা ভুক্তভোগী তাদের শ্রমার্জিত অর্থ ফেরত পেতে সহায়তা করুন। এবং এধরনের প্রতারণা করতে দ্বিতীয়বার যাতে কেউ সাহস না পায় সেলক্ষ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।নতুন বছরে সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক, এটাই প্রত্যাশা। এভারশাইন (ইশা) বহুমুখী সমবায় সমিতির ও এভারশাইন গ্রুপরে ভুক্তভোগী প্রবাসীরা ।

দুর্নীতির আরো রিপোর্ট জানতে চোখ রাখুন নিউজ প্রতিদিন ডট নেটে।