রেকর্ডটার কথা হয়তো অনেকেরই মনে নেই। ১২৯ বছর ধরে অক্ষত রেকর্ডের কথা কারই বা মনে থাকবে? সেই ১৮৮৭ সালে জীবনের প্রথম দুই টেস্টে ১৮টি উইকেট শিকার করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার জন জেমস ফেরিস। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯ উইকেট নিয়ে সেই রেকর্ড ভেঙে দিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
বাঁহাতি পেসার ফেরিসেরও অভিষেক হয়েছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। সিডনিতে অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসে তিনি নিয়েছিলেন চার উইকেট। ফেরিস আর ছয় উইকেট নেওয়া চার্লি টার্নারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ইংল্যান্ড অলআউট হয়ে গিয়েছিল মাত্র ৪৫ রানে।
তবু ওই ম্যাচে জিততে পারেনি অস্ট্রেলিয়া! দ্বিতীয় ইনিংসে ফেরিস পাঁচ উইকেট শিকার করেও দলকে জয় এনে দিতে পারেননি। মাত্র ১১১ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া অলআউট হয়ে গিয়েছিল ৯৭ রানে।
পরের টেস্টের ভেন্যুও ছিল ঐতিহাসিক সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড। ফেরিসের দুর্ভাগ্য, প্রথম ইনিংসে পাঁচ আর দ্বিতীয় ইনিংসে চার উইকেট নিলেও আবারও পরাজয়ের তেতো স্বাদ পেতে হয়েছিল তাঁকে। ম্যাচটা ইংল্যান্ড জিতে নিয়েছিল ৭১ রানে।
মিরাজ আর বাংলাদেশেরও সৌভাগ্য, মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে তেমন ‘দুর্ঘটনা’ হয়নি। চট্টগ্রামে ভালো খেলেও মাত্র ২২ রানে হার মানতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। তবে মিরপুরে মিরাজ আর সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণিতে পর্যুদস্ত হয়েছে ইংল্যান্ড।
ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি নয়, সরাসরি টেস্ট ক্রিকেটের কঠিন জমিতে নেমে পড়েই সবার মন জয় করে নিয়েছেন মিরাজ। প্রথম টেস্টে সাত উইকেটের পর মিরপুরে তার শিকার ১২টি। আজ চা-বিরতির পর প্রথম বলেই বেন ডাকেটকে বোল্ড করা মিরাজের মাধ্যমেই ইংল্যান্ডের সর্বনাশের সূচনা। বিনা উইকেটে ১০০ রানের স্বস্তিকর অবস্থান থেকে অতিথিরা যে ১৬৪ রানেই শেষ, তাতে এই তরুণ অলরাউন্ডারের বিরাট ভূমিকা।
দুই টেস্টের চার ইনিংসে ১৫.৬৩ গড়ে ১৯ উইকেট—এক কথায় অসাধারণ বোলিং। মাত্র ১৯ বছর বয়সী এক তরুণের কাছেই আসলে ব্রিটিশ সিংহরা কুপোকাত। বাংলাদেশের আকাশ-বাতাস আজ তাই ‘মিরাজ’, ‘মিরাজ’ চিৎকারে প্রকম্পিত।