২রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১৭ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 189

কলাপাড়ায় মটর সাইকেলের দূর্ঘটনা বাড়ছেই

 

এ,আর, কুতুবে আলম : পটুয়াখালী জেলা কলাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এমনকি কলাপাড়া পৌরশহরের মধ্যেও লাইসেন্স বিহীন অদক্ষ চালকরা দেদাছে মটোর সাইকেল চালিয়ে যাত্রী নিয়ে এক স্থান হতে অন্য স্থানে চলাচল করে আসছে। এ যেন দেখার কেই নাই প্রশাসনের নাকের ডগায়ই চলছে এই অদক্ষ চালকের রেজিষ্ট্রেশনবিহীন মটোর সাইকেলগুলি । উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায়ই ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা ।

এলাকা সূত্রে জানাযায়. কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ও চম্পাপুর ইউনিয়নের শেষ বর্ডার পাচজুনিয়া গ্রামের আ. মৌজলী খানের ছেলে মো. আব্দুল মালেক খান (৬৭)। তিনি তাদের বাড়ির সামনে সড়কে মসজীদের পাশে গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় দাঁড়িয়ে কথা বলছেন । এমন সময় চম্পাপুর ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের ইসমাইল হাওলাদারের ছেলে রিয়াজ হাওলাদার (১৮) মিলন মৃধা নামের এক যাত্রী নিয়ে ধানখালী ডিগ্রী কলেজ বাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। এসময় অদক্ষ চালক নেশা খোরের ন্যায় মটোর সাইকেলটি ব্রেক ফেল করে আব্দুল মালেক খানের শরীরে উঠিয়ে দেয়। তখন মালেক খান অজ্ঞান হয়ে পড়ে। মালেক খানের পরিবার চালকসহ মটোর সাইকেলটি আটক করে। এরপর তাৎক্ষনিক এ্যাম্বুলেন্স ডেকে সন্ধ্যায় মালেক খানকে নিয়ে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে মৃত‚্যর সাথে যুদ্ধ করে অজ্ঞান অবস্থায়ই তিনি শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় মারা যান। এদিকে, স্থানীয় লোকজন পড়ে চালক রিয়াজ হাওলাদারকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। তার মটোর সাইকেলটি আজো মালেক খানের বাড়িতে আছে। এর আগেও পাখিমারা রুবেল নামের এক স্কুল ছাত্র মটোর সাইকেলে এ্যাকসিডেন্ট করে নিহত হয়েছে। কয়েক মাস আগে ধানখালী লোন্দা খেয়াঘাট যএলাকায় এক বৃদ্ধ মটোর সাইকেল এ্যাকসিডেন্টে মারা গেছে। চম্পাপুর ইউনিয়নের পাটুয়া এলাকায়ও মটোর সাইকেলে এ্যাকসিডেন্ট করে নিহত হয়ে। বালিয়াতলী ভাবলাতলা একই পরিবারের ৩ জন গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম হয়েছে। কলাপাড়ার মাদ্রাসা সড়কেও দুই মটোর সাইকেলে মুখোমুখী সংঘর্ষে ঢাকা থেকে যাওয়া সিনিয়র সাংবাদিক এর আত্মীয়সহ চারজন গুরুতর আহত হয়েছিল ।

এলাকাবাসী আরো জানান, কলাপাড়া এলাকার প্রত্যেক ইউনিয়নেই রেজিষ্ট্রেশনবিহীন মটোর সইকেল ও অদক্ষ চালকের হিড়িক। তারা অনেকে নেশা সেবন করেও মটোর সাইকেল চালায়। আবার কতিপয় চালকরা শহর ও সাগর পাড় হতে ইয়াবা গাঁজাসহ নানা প্রকার নেশাদ্রব্যদি আনা নেওয়া করে। কলাপাড়া উপজেলার ট্রাফিক ব্যবস্থা নড়বড় হওয়ায় অপরাধীরা তাদের যানবাহনে অবৈধ মালামাল টানতে সহজ হয়। বিভিন্ন বিয়ে বাড়িতেও নেশা সেবনের আসর বসায় বলে গ্রামের সচেতন অভিভাবক জানান । আর এই নেশা সরবরাহ করে কতিপয় কিছু অসাধু মটোর সাইকেল চালকরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান এই চালকের কিছ রাজনৈতিক মার্কা নেতাদের চামচাও বটে তাড়া অপরাধ করতে দ্বিধাবোধ করছে না।

আওয়ামীলীগের এক প্রবীন নেতা ও আরেক ত্যাগীকর্মী জানান, নেশাখোর চালকদের হাত নাকি অনেক বড় । এরা নিজেরাও সেবন করে আর পাড়া মহল্লায়ও মাদক ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করে আসছে। এদের কে সেল্টার দিচ্ছে কতিপয় কিছু পাতি নেতারা। ফলে কেহ ভয়ে মুখ খুলছেনা । বাংলাদেশ সরকারের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন ,যারা সন্ত্রাস করবে নেশা বিক্রিতে সহায়তা করবে তাদেরকে ছাড় দেয়া হবেনা সন্ত্রাস আর মাদক ব্যবসাযীদের কোন দল নেই। তারা জাতির ধ্বংসকারী সুতরাং গ্রামগঞ্জের সবাইর সচেতন হতে হবে এমনাই বলে আসছেন ইন্নয়নের রূপকার ডিজিট্যাল দেশ গড়ার স্বপ্নাদ্রষ্টা শেখ হাসিনা ।

এব্যাপারে কলাপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহনেওয়াজ জানান, চালকের লাইসেন্স চেক ও রেজিষ্ট্রেশনবিহীন মটোর সাইকেল আটক করছি এবং ধরে মামলাও দিচ্ছি গত শুক্রবারও ১০ (দশ)টি মটোর সাইকেল ধরে মামলা দিয়েছি। আমাদের অভিযান নিয়মিত চলছে এবং চলবে। তিনি আরো বলেন, এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তি জনপ্রতিনিধিদেরও এই অবৈধ অদক্ষ চালকদের চিহ্নিত করতে সহায়তা করতে হবে। পুলিশের সংখ্যা কম । সুতরাং সবাই পুলিশের কাজে সহায়তা করলে দেশ আরো এগিয়ে যাবে এবং অপরাধ হ্রাস হবে। নেশা বিক্রেতা ও বিক্রিতে সহায়তাকারী আমার কাছে কোন ক্রম্রেই ছাড় পাবেনা সে যেই হোক। আমাদের সরকার সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে নির্মূলের প্রত্যয় নিয়ে জেহাদ ঘোষনা করে আসছেন ।

নৌকা আমাদের সব সময় কাজে লাগবেই-প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এ কারণে মাঝে মাঝেই বন্যা আসবে। সেজন্য নৌকা ছাড়া কোনো গতি নেই আমাদের। নৌকা আমাদের সব সময় কাজে লাগবেই। এটাই হলো বাস্তবতা। আর সেই নৌকা মার্কা যখন ক্ষমতায় আসে তখনই দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়।

শনিবার বিকেলে বগুড়ার সারিয়াকান্দি ডিগ্রি কলেজ মাঠে ত্রাণ বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশের মানুষকে আর ভিক্ষা নিয়ে চলতে হয় না। কিন্তু বিএনপি সবসময় চাইতো এই বাঙালি জাতিকে ভিক্ষুক করে রাখতে। আমরা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে যাওয়ার পর ১৯৯৮ সালে খালেদা জিয়া ও তার অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান সংসদে গিয়ে বলেছিল খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলে বিদেশের সাহায্য পাওয়া যাবে না। তারা দেশকে ভিক্ষুক করতে চাইলেও আমরা তা চাই না। আমাদের মাটি আছে, মানুষ আছে। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াবো। সম্মানের সঙ্গে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াব।

 

সারিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাদারা মান্নানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, বগুড়া-১ আসনের সাংসদ আব্দুল মান্নান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজীত রায় নন্দী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মমতাজ উদ্দিন প্রমুখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান মজনু।

শনিবার প্রধানমন্ত্রী সারিয়াকান্দির বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এক হাজার পরিবারকে ত্রাণ সামগ্রী ও ২৫০ কৃষকের মাঝে ধানের চারা বিতরণ করেন। ত্রাণ বিতরণ শেষে সারিয়াকান্দি ডিগ্রি কলেজ হল রুমে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুধী সমাজ ও বন্যা ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাইবান্ধা থেকে হেলিকপ্টার যোগে দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে সারিয়াকান্দি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পৌঁছান। সেখানে থেকে গাড়িতে করে সারিয়াকান্দি ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত সমাবেশস্থলে পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ২০ বছর পর শনিবার যমুনাপাড়ের জনপদ সারিয়াকান্দি আসেন। এর আগে ১৯৯৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তিনি সারিয়াকান্দি সফরে এসেছিলেন।

কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ

ডেস্ক নিউজঃ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে আবারও বাংলাদেশে রোহিঙ্গা প্রবেশ করায় দেশটির দূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ।

এ পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গারা যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে তা মিয়ানমারকেই নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। শনিবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মিয়ানমারের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স আং মিন্ট থানকে ডেকে এ কথা বলা হয়।

এ বিষয়ে পররষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়ে রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছি। পাশাপাশি এ সহিংস পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশে অাবারও রোহিঙ্গা প্রবেশ করার বিষয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের বিষয়টি জানানো হয়েছে।

মিয়ানমারের কোনো নাগরিক যাতে এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে না আসতে পারে বিষয়টি মিয়ানমারকেই নিশ্চিত করে নিরাপত্তা জোরদার করতে বলা হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, এছাড়া মিয়ানমারের সন্ত্রাসীগোষ্ঠীকে বাঙালি অখ্যায়িত দিয়ে দেশটি যে বিবৃতি দিয়েছে তা আমাদের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে অামাদের আপত্তির বিষয়টি মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে অবগত করে পরবর্তীতে আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছি।

পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল  বলেন, এর অাগে মানবিক কারণে বহু রোহিঙ্গাকে অাশ্রয় দিলেও অার অামরা সেটা দেব না। এভাবে চলতে পারে না।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) রাতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ৩০টি পুলিশ পোস্টে হামলার ঘটনার পর উত্তেজনা আর শঙ্কার মধ্যে কক্সবাজার ও বান্দরবান সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টায় রয়েছে। কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী স্থল সীমান্ত দিয়ে প্রবেশের আশায় শুক্রবার থেকে নাফ নদীর কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীরে বসে আছে অসহায় কয়েক হাজার নারী-শিশু-বৃদ্ধ।

এদিকে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। শুক্রবার ১৪৬ জন এবং শনিবার সকাল পর্যন্ত ৭৩ জনকে আটকের পর মানবিক সহায়তা দিয়ে আবারও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত ভারতের ধর্মগুরু, সহিংসতায় নিহত ১৭

দু’জন নারী ভক্তকে ধর্ষণের অভিযোগে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ভারতের স্বঘোষিত আধ্যাত্মিক ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিং। শুক্রবার চণ্ডিগড়ের পাঁচকুলার একটি বিশেষ আদালত ওই রায় ঘোষণা করেছে। ধর্ষণের দায়ে গুরমিতের সাজা কী হবে, সোমবার আদালত সেই সিদ্ধান্ত জানাবে।

দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরপরই সহিংসতা শুরু করেন রাম রহিম সিংয়ের ভক্তরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১৭ জন নিহত এবং দুই শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সেক্ষেত্রে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

রায় ঘোষণার আগে থেকেই পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্য জুড়ে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছিল। একইসঙ্গে এলাকাগুলোতে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। রাম রহিম সিংয়ের ভক্তরা বিক্ষোভ শুরু করলেই পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।

সহিংসতা শুরুর আশঙ্কায় শুক্রবার সকাল থেকেই পাঁচকুলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করে রাখা হয়েছে। হরিয়ানা ও পাঞ্জাবে মোতায়েন করা হয় ৫০ হাজার পুলিশ। নিহতের ঘটনা ঘটেছে ওই এলাকাগুলোতেই। ১৪৪ ধারা জারি করার পাশাপাশি ৪৮ ঘণ্টার জন্য ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে রাজস্থানের শ্রী গঙ্গানগর ও হনুমানগড়ে। পুলিশ একটি স্টেডিয়ামও অধিগ্রহণ করে রেখেছে বহু লোককে গ্রেফতার করার আশঙ্কায়।

নিজের সাংগঠনিক দফতর থেকে শ’খানেক গাড়ি নিয়ে পাঁচকুলা আদালতে পৌঁছান রাম রহিম সিং। তবে শেষ পর্যন্ত আদালতে চত্বরে প্রবেশের অনুমতি পায় মাত্র দুটি গাড়ি।

রাম রহিম সিংয়ের বিরুদ্ধে যে দুজনকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে, সেটা ১৫ বছর আগের ঘটনা। ২০০২ সালে এই ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করে সিবিআই। সেটাও অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির চিঠির সূত্র ধরে। ১৯৯৯ সালে নিজের আশ্রমে দুই নারীকে তিনি ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়।

২০০৭ সাল থেকে শুনানি চলার পর ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট দোষী সাব্যস্ত করা হয় ধর্মগুরুকে। তবে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছেন তিনি।

সূত্র : বিবিসি, আনন্দবাজার

বন্ধু নুরুকে এডভোকেট আল আমীনের খোলা চিঠি

বন্ধু নূরু,
যেখানেই থাকিস ভালো আছিস নিশ্চয়। কয়েক বছর চলছে তোর সাথে সাক্ষাৎ নেই। জীবনের বাস্তবতাই এর জন্য দায়ী। আজ সেইসব দিনগুলোর কথা মনে পড়ছে, যেইসব দিনগুলো ভবিষ্যতের জন্য বিড়ম্বনার না হয়ে আনন্দের হওয়ার কথা ছিল। তুই আর আমি ক্লাসমেট বন্ধু ছিলাম, যদিও বয়সে আমার চেয়ে তুই অনেক বড়। বন্ধু হিসেবে তুই এতটাই আমাকে ভালোবাসতিস যে, আমার সফলতায় তোর মূখে হাঁসি ফুটতো আর ব্যর্থতায় তোর চোঁখে আসত জল। তোর মতো বন্ধু পাওয়া যেকারো জন্যই ভাগ্যের ব্যাপার। অথচ আজ মনে হচ্ছে- তোর সাথে বন্ধুত্ব না হলেই মনে হয় ভালো হত; জীবনের এই পর্যায়ে এসে “ফালতু অতীত” বিড়ম্বনা হয়ে সামনে দাঁড়াত না।

আমি তোর চাচাত বোনের সাথে সম্পর্ক করতে রাজি ছিলাম না। তোর চাচাত বোনের পাগলামোর কারণে তুই আর তোর চাচি আমাকে বাঁধ্য করেছিলি সম্পর্কে জড়াতে। আমি রাজি না হলে নাকি তোর চাচাত বোনকে সুস্থ্য করা সম্ভব নয়- সে মারা যাবে। ইতোমধ্যে, অনেক কবিরাজ-ডাক্তার ব্যর্থ হয়েছিল তোর বোনকে সুস্থ্য করতে। প্রেম রোগ কি আর ডাক্তার-কবিরাজে ভালো হয়? তোর বোনের অসুখ সাড়াতে তুই একদিন রাত দুইটার সময় আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল তোদের গ্রামে তোর চাচার ঘরে। আমাকে জোর করেই তুই নিয়ে গিয়েছিল- হুমকি দিয়ে। ঘরে ঢুকে দেখি তোর চাচি কাঁদছে। সে রাতে আমি তোর বোনকে সুস্থ্য হওয়ার ঔষধ, ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি, দিয়ে এসেছিলাম। তারপর থেকে…। তোর বোন আর আমার সম্পর্কটি লুকোচুরির ছিল না। সেটা ছিল এলাকায়, বিশেষ করে আমাদের দুই গ্রামে, আলোচিত প্রেমের উপাখ্যান। লোকে জানত আমরা বিয়ে করে ফেলেছিলাম। তোর বোনের জন্যই তো এক সিনিয়র ভাইয়ের সাথে মারামারি পর্যন্ত হয়েছিল। সেসব আর বলতে চাই না।

ঢাকায় পড়ালেখা করতাম। তোর বোনকে দেওয়া কথা মোতাবেক আমি প্রতি বৃহস্পতিবার বাড়ি আসতাম তোর বোনের নয়ন জুড়াতে। এইচএসসির ফাইনাল পরীক্ষার ব্যস্ততার কারণে কয়েক মাস বাড়ি আসা হচ্ছিল না। এরই মধ্যে তোর চাচার পরিবারে একটা দুর্ঘটনার কারণে তারা গ্রাম ছেড়ে চলে আসে শহরে। তখন তুই সিঙ্গাপুরে। রিটেন পরীক্ষা শেষ করে ব্যবহারিক পরীক্ষার আগে বাড়িতে এসে তোদের গ্রামে আমার ফুফুর বাড়িতে গিয়ে তোর চাচি আর তোর চাচাত বোনের বিশ্বাসঘাতকতার সংবাদটি শুনতে পাই। তোর চাচা বিদেশে থাকায় তোর চাচিই ছিল তখন সংসারের প্রধান নির্বাহী। আমি নিজেকে সামলে নিয়েছিলাম; যদিও সময় লেগেছিল। সিঙ্গাপুর থেকে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে তুই কেঁদেছিলি অনেক। নিজেকে আমার সামনে অপরাধী হিসেবে আত্মসমর্পন করেছিলি।

সবকিছুকে পেছনে ঠেলে আমি আমার লক্ষ্যে পৌছার সংগ্রামে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিলাম। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা এবং রাজনীতি নিয়ে যখন আমি ব্যস্ত সময় পার করছিলাম এমনি কোন এক শবে বরাতের রাতে তোর বোনের ফোন পেলাম। কয়েকদিন এভাবে ফোন করতে থাকলে এক পর্যায়ে তাকে বিরত হতে বাঁধ্য করলাম। কারণ বংশহীন পরিবারে আমার জন্ম হয় নি।

তারপর থেকে অনেকগুলো বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে। আমি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের উপর সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে আইন পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেছি। বিয়ে করেছি, সন্তান হয়েছে। সূখেই আছি। পেশাগত জীবনের পাশাপাশি রাজনীতিটাও চালিয়ে যাচ্ছি। এমনই এক সুন্দর সময়ে অতীত সামনে এসে দাঁড়িয়েছে বিড়ম্বনা হয়ে; যেই অতীত ঘটনাবলীর তুই অন্যতম চরিত্র। প্রেম করা কি পাপ? প্রেম করে তোর বোনকে সুস্থ্য করা কি পাপ ছিল?। আমি তো কারও স্ত্রীর সাথে প্রেম করিনি। আমার সাথে সম্পর্ক ছিল তখন, যখন তোর বোন কারও স্ত্রী ছিল না।

তোর ভগ্নিপতি স্থানীয় পত্রিকার সাংবাদিক। তোর বোনের সাথে অতীতের সেই সম্পর্কের জের ধরে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে সে আমাকে উদ্দেশ্য করে মিথ্যা বানোয়াট কথামালা সাজিয়ে সংবাদের নামে পত্রিকায় গল্প লেখে। আমার ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক সুনাম নষ্ট করতে চায়। যদিও এই ছোকড়ার পক্ষে সেটা কখনও সম্ভব নয়, তবুও ছোকড়ার লাফালাফিটা অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে দিনদিন। এই সাংবাদিক ছোকড়ার ব্যক্তিগত যোগ্যতা ও তার পারিবারিক ইতিহাস তো ভালো করেই জানিস তুই। শুধু তুই কেন আমাদের দুই গ্রামের কে না জানে? ওর মতো এইট পাশ লোকাল পত্রিকার সাংবাদিকের নাম আমার মূখে উচ্চারণ করাও বেমানান। এমন পরিস্থিতিতে তুই প্রাসঙ্গিক চরিত্র। বল বন্ধু, “কী করা উচিত?”

নূর হোসেন, তারেক সাঈদ, আরিফ হোসেন ও রানাসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল

ডেস্ক নিউজঃ  নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার হাইকোর্টের রায়ে সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন ও সাবেক তিন র‌্যাব কর্মকর্তা তারেক সাঈদ, আরিফ হোসেন ও মাসুদ রানাসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রয়েছে। এছাড়া, রায়ে ১১ জনের যাবজ্জীবন ও ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

এর আগে, বিচারিক আদালতের রায়ে ৩৫ জন আসামির মধ্যে নূর হোসেন, তারেক সাঈদ, আরিফ হোসেন ও মাসুদ রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, কয়েকজনের জন্য পুরো বাহিনীকে দোষী করা যাবে না। যারা দোষ করেছে, তাদের সাজা দেওয়া হয়েছে।
রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘১১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিষয়ে আপিল করা হবে কিনা, পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ তিনিও মনে করেন, কয়েকজন ব্যক্তির দায় পুরো বাহিনীকে দেওয়া ঠিক হবে না।

হাইকোর্টের রায়ের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মামলার বাদী বিউটি বলেন, ‘ন্যায়বিচার পেয়েছি।’

আসামি পক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘প্রত্যাশা করেছিলাম আসামিরা খালাস পাবে। কিন্তু কেউ খালাস পায়নি। ন্যায়বিচার হয়েছে বলে আমরা মনে করি না।’

এর আগে, মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষ হয় ২৬ জুলাই। ওই দিন রায় ঘোষণার জন্য ১৩ আগস্ট দিন ধার্য করেন আদালত। তবে সেদিন রায় ঘোষণা না করে রায় ঘোষণার জন্য ২২ আগস্টকে নতুন দিন ঘোষণা করা হয়।

মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ হলো আমাদের রক্ষা করা, সেখানে তারাই হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছে। দেশে যত অপরাধ ঘটেছে, সব অপরাধের পরিসংখ্যান যদি নেওয়া হয় তবে এই অপরাধটি অপরাধ জগতের মাইলফলক হয়ে থাকবে।’
গত ২২ মে সাত খুন মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয়। চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত নুর হোসেনসহ আসামিদের নিয়মিত ও জেল আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নূর হোসেন, তারেক সাঈদসহ আসামিরা খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল দায়ের করে।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান, অ্যাডভোকেট আহসান উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সরোয়ার কাজল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।
বিচারিক আদালতের রায়ে এ মামলায় দণ্ডিত ৩৫ আসামির মধ্য ২৫ জনই র‌্যাবের সদস্য। তাদের মধ্যে ১৫ জন সেনাবাহিনী, দু’জন নৌবাহিনী ও আটজন পুলিশ বাহিনীর সদস্য হিসেবে ছিলেন। ফৌজদারি অপরাধে একসঙ্গে এত র‌্যাব সদস্যদের সাজা এর আগে আর হয়নি। সাত খুনের মামলা হওয়ার পর তাদের সবাইকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া থেকে অপহরণ করা হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন, সহযোগী মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, স্বপনের গাড়ি চালক জাহাঙ্গীরকে । ঘটনা দেখে ফেলায় নজরুলের গাড়ির পেছনে থাকা আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিমও অপহৃত হন। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে মেলে ছয়জনের লাশ। পরের দিন ভেসে ওঠে আরেকটি লাশ। মৃতদেহগুলো ইটভর্তি দুটি করে বস্তায় বেঁধে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। ওই ঘটনায় নিহত নজরুলের স্ত্রী বিউটি ও চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল দু’টি মামলা করেন। একসঙ্গে দুই মামলার বিচার শেষে গত ১৬ জানুয়ারি রায় দেন নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ এনায়েত হোসেন।

শহীদ মিনারে নায়ক রাজকে সর্বস্তরের শ্রদ্ধা

 

ডেস্ক নিউজঃ  বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী অভিনেতা রাজ্জাকের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ সেখানে নেওয়া হয়।

সেখানে নায়করাজ রাজ্জাককে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়েদুল কাদের, , সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খানসহ সর্বস্তরের মানুষ।

শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর দুপুর সোয়া ১টার দিকে তার মরদেহ গুলশানে আজাদ মসজিদ প্রাঙ্গণে নেওয়া হবে। সেখানে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে।

এর আগে সকাল ১১টার দিকে গুণী এই চলচ্চিত্র অভিনেতার মরদেহ এফডিসিতে নেওয়া হয়। সেখানে চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, শিল্পী ও কলাকুশলীরা রাজ্জাককে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সোমবার (২১ আগস্ট) রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলা চলচ্চিত্রের প্রবাদপুরুষ ও কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি পাঁচ সন্তানসহ, অসংখ্য বন্ধু-বান্ধব, ভক্ত, অনুসারী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

রাজ্জাক ১৯৪২ সালে ২৩ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার টালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা সিনেমায় ‘নায়করাজ’ উপাধি পেয়েছিলেন তিনি।

ষাটের দশকের মাঝামাঝি তিনি চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেন। সত্তরের দশকে তাকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে প্রধান অভিনেতা হিসেবে বিবেচনা করা হত। তিনি একাধারে অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক হিসেবে সুনাম অর্জন করেন।

আখেরি স্টেশন, বেহুলা, আগুন নিয়ে খেলা, এতটুকু আশা, নীল আকাশের নীচে, জীবন থেকে নেয়া, নাচের পুতুল, অশ্রু দিয়ে লেখা, ওরা ১১ জন, অবুঝ মন, রংবাজ, আলোর মিছিল তার ক্যারিয়ারের অন্যতম মাইলফলক।

নায়করাজ রাজ্জাক পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পান। এছাড়া ইন্দো-বাংলা কলা মিউজিক পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কার, আজীবন সম্মাননা (চলচ্চিত্র), ইফাদ ফিল্ম ক্লাব পুরস্কার পান তিনি।

নায়করাজের মৃত্যুর খবর শুনে ইউনাইটেড হাসপাতালে ছুটে যান নায়ক আলমগীর, ফেরদৌস, ওমরসানি, গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার ও চলচ্চিত্র জগতের কলাকুশলীরা।

ম্যাজিষ্ট্রেট আসবে বলে, পোষ্ট অফিস মোড়ের সব ফামের্সী বন্ধ!

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ম্যাজিষ্ট্রেট আসার খবরে ফতুল্লা পোষ্ট অফিস মোড়ে অবস্থিত সবগুলো ওষুধের ফামের্সী বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যায় ফামের্সীর মালিকরা।

স্থানীয়দের মতে, এসব ফামের্সীগুলোর সঠিক কাগজ নাই এবং নিষিদ্ধ অনেক ওষুধ বিক্রি করে থাকে, যে কারণে ম্যাজিষ্ট্রেট আসার খবর এসব ওষুধের দোকনোর মালিক-কর্মচারীরা তাদের নিজ নিজ ওষুধের ফাসমর্সী বন্ধ করে পালিয়ে যায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই এলাকায় অবস্থিত সবগুলো ওষুধের ফামের্সীতেই পাশ্ববর্তীদেশ ভারতের নিষিদ্ধ ওষুধ বিক্রি হচ্ছে দেদারছে। যে কারনে তাদের মধ্যে সব সময় আতঙ্ক বিরাজ কেরে। শুধু ওষুধ ফামের্সীই নয়, এখানে দুইটি ডায়াগোনষ্টিক সেন্টার রয়েছে, এই দুইটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায় ম্যাজিষ্ট্রেট আসার খবরে। এসব ফামের্সী ও ডায়াগোনষ্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি স্থানীয়দের। এ ব্যাপারে সিভিল সার্জনের হস্তক্ষেপ চেয়েছে তারা।

নারায়ণগঞ্জ থেকে জেএমবির সক্রিয় ৩ সদস্য আটক

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জে পৃথক দুটি স্থানে অভিযান চালিয়ে জেএমবির ৩জন সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে র‍্যাব-১১। এসময় তাদের কাছ থেকে পিস্তল, গুলি ও জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে র‍্যাব সূত্রে জানা যায় নারাণগঞ্জের লাঙ্লবন্দ ও তারাবো এলাকায় জঙ্গীবিরোধি অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আজ মঙ্গলবার ভোরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গুলি, বই ও লিফলেট উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আবদুর রহমান ওরফে সুফিয়ান ওরফে রুবেল (২৭), ইমাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু মনা (২৬) ও সৈয়দ রায়হান আহমদ ওরফে নাসির (৩০)।

র‌্যাব-১১ জানায়, গোপন খবরে নারায়ণগঞ্জে বন্দরের লাঙ্গলবন্দ এলাকায় আবদুর রহমান ও ইমাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করার সময় জঙ্গিরা র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে র‌্যাবকে লক্ষ্য গুলি ছোড়ার চেষ্টা করে। এ সময় আবদুর রহমানের কোমর থেকে ৬ রাউন্ড গুলিভর্তি একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তারাব এলাকা থেকে নাসিরকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

আলোচিত জজ মিয়া এখন গাড়ি চালক!

ডেস্ক নিউজঃ  শোকগাঁথা একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আলোচিত এক নাম জজ মিয়া। সে সময় সিআইডি’র সাজানো নাটকে গ্রেপ্তার হওয়া নোয়াখালীর আলোচিত সেই জজ মিয়া আজ সর্বহারা। নোয়াখালীর সেনবাগ কেশারপাড় ইউনিয়নের বীরকোট গ্রামের  টেন্ডল বাড়ির জালাল আহমদ জজ মিয়া দীর্ঘ কারাভোগের পর গ্রাম ছেড়েছেন। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় এক বস্তিতে বসবাস করছেন। জজ মিয়া বাঁচার তাগিদে মা আর ছোট বোনকে নিয়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে চাকরি করছিলেন। কিন্তু স্বল্প বেতনে তার পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন যাপন করা কষ্টসাধ্য হওয়ায় চাকরি ছেড়ে দিয়ে বর্তমানে অন্যত্র চাকরির আশায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সারা দেশে জজ মিয়া আলোচিত হলেও এলাকায় বা আত্মীয়স্বজনদের কেউই তার পরিবারের খোঁজখবর জানেন না। বীরকোট গ্রামের মৃত আবদুর রশিদ ও জোবেদা খাতুনের ৪ ছেলে ১ মেয়ের মধ্যে জজ মিয়া দ্বিতীয়। প্রায় একযুগ আগে তার বাবা মারা যাওয়ার পর সামান্য পুুঁজি নিয়ে ঢাকার মতিঝিলে ফলের ব্যবসা করতেন জজ মিয়া। ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ৯ মাস পর সেনবাগ থানার এএসআই কবির হোসেন গ্রাম পুলিশ মোকছুদ মিয়ার সহায়তায় বীরকোট গ্রামের রাজামিয়ার চা দোকান থেকে গ্রেপ্তার করে জজ মিয়াকে। পরে থানা থেকে জজ মিয়াকে সিআইডির এএসপি আবদুর রশিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর কয়েক দিনের মাথায় জজ মিয়া ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনায় জড়িত বলে স্বীকারোক্তির খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। নানা নাটকীয়তার পর ২০০৮ সালের ১১ই জুন আদালতে সিআইডির দাখিল করা চার্জশিটে ২২ জনকে আসামি করা হলে অব্যাহতি দেয়া হয় জজ মিয়াকে। তখন জজ মিয়া মুক্তির বিষয়টি আটকে যায় ঢাকার সূত্রাপুর থানায় বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা (১০৮, তাং- ২৭-১২-৯৮) মামলায়। এ মামলায় কোনদিন জজ মিয়াকে আদালতে হাজির না করা হলেও ২০০৫ সালের ২রা নভেম্বর আদালত তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। দীর্ঘ তদন্তের পর সিআইডি’র পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল জজ মিয়া ওই হামলায় জড়িত। যদিও তখনই এর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল বিভিন্ন মহলে। এর পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তদন্তের মূল রহস্য বেরিয়ে আসে। মামলা ভিন্নখাতে নেয়ার অভিযোগে তৎকালীন সিআইডির তিন তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি আবদুর রশিদ, এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান ও বিশেষ পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে সরকার মামলা করে। সেই সময়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের সঙ্গে অভিযুক্ত করা হয় তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে জজ মিয়ার বিরুদ্ধে পুলিশ চার্জশিট দিলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার সময়ে তদন্ত শেষে চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয় জজ মিয়াকে। দীর্ঘ ৪ বছর ২ মাস ২৫ দিন কারাভোগের পর ২০০৯ সালের ২০শে জুলাই কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান জজ মিয়া। কারামুক্তির পর ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে বীরকোট তার পৈতৃক বাড়িতে এসে আত্মীয়দের ঘরে উঠেন জজ মিয়া। কারণ মামলার ব্যয় বহন করতে গিয়ে ভিটেমাটিসহ সবকিছুই হারাতে হয়েছে জজ মিয়ার পরিবারকে। গত ২০শে আগস্ট রোববার জজ মিয়ার পৈত্রিক নিবাস বীরকোট গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বিক্রীত বসতঘরের দরজায় তালা ঝুলছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জজ মিয়া জেলে থাকা অবস্থায় তার পরিবার বসতবাড়ির জায়গাটুকু তার জেঠাত ভাই রফিক উল্যার কাছে বিক্রি করে দেয়। জজ মিয়ার মামলার সাক্ষী বীরকোট গ্রামের সাবেক মেম্বার বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তাফা চৌধুরী জানান, ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় জড়ানো জজ মিয়া ঘটনার দিন ও সময়ে তার বাড়ির পাশে বাবুলের দোকানে আমাদের সঙ্গে বসে চা খেতে খেতে টেলিভিশনের পর্দায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ঘটে যাওয়া গ্রেনেড হামলার দৃশ্য দেখছিলেন। কিন্তু গ্রেনেড হামলা মামলায় তাকে জড়িয়ে তার পরিবারটিকে সর্বস্বান্ত করা হয়েছে। এর পর কেউই তার খোঁজখবর রাখেননি। তার মা জোবেদা বেগমের আবেদনের প্রেক্ষিতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে গত ২৫ রমজান দু’লাখ টাকার চেক প্রদান করেন। জজ মিয়া ও তার পরিবারের দুঃখ-দুদর্শার কথা একে একে তুলে ধরলেন চায়ের দোকানদার বাবুল মিয়া, রাজা মিয়াসহ এলাকার শত শত নারী পুরুষ। এক আত্মীয়ের ফোনে জজ মিয়ার মাতা জোবেদা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, আমার নিরপরাধ ছেলেটিকে ধরে নিয়ে কত নাটক সাজাইছে। আমার পুরো পরিবারটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বাড়িঘর বিক্রি করে দিতে হয়েছে। জোট সরকারের আমলে সর্বস্বান্ত হয়ে বর্তমান সরকারের নিকট একটু মাথা গোঁজার জায়গার জন্য বহু আবেদন করেছি। না পেয়ে বর্তমানে বস্তিতে বসবাস করছি। ছেলের ভবিষ্যৎ পথ চলা ও নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করলেন মা জোবেদা। এদিকে বহুল আলোচিত জজ মিয়ার সঙ্গে আলাপ করলে তিনি জানান, আমাকে নিয়ে সিআইডির নাটকের কথা এদেশের মানুষ জানেন। মিথ্যা মামলায় পড়ে আমার জীবন থেকে গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলো চলে গেছে বলে হুঁ হুঁ করে কেঁদে ফেললেন জজ মিয়া। তিনি বলেন, আমি কখনো কোন রাজনীতি বা দলাদলিতে ছিলাম না। টুকিটাকি ব্যবসা করে কোনো রকম পরিবার পরিজন নিয়ে চলতাম। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় সিআইডি কর্মকর্তাদের সাজানো মামলায় আমাকে বলি করা হয়েছে। তাদের নাটকের বলি হয়ে দীর্ঘ সময় কারাভোগের পর বর্তমানে আমি নিঃস্ব। সরকারের কাছ থেকে একটু মাথা গোঁজার জায়গা ও জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি চাকরি পেলে সংসার জীবনে পদার্পণ করে সুখী জীবন যাপন করতে পারবো।