স্টাফ রিপোর্টার:
আড়াইহাজারে বিএনপিতে রাজনীতিতে অচিরেই অভিষেক হতে পারে তরুণ দুইনেতার। থানা বিএনপি’র নেতৃত্ব হাঁরাতে পারেন প্রায় তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে নেতৃত্বে থাকা সাবেক এমপি আঙ্গুর ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এএম বদরুজ্জামান খসরু। তাদের নানা কূটকৌশলের রাজনীতি অনেকটা পরিস্কার করে দিয়েছেন স্থানীয় বেশকিছু পত্রিকা। এই প্রথম ৪ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রকাশিত বেশ কয়েকটি পত্রিকায় “মাইনাস হচ্ছে আঙ্গুর ও খসরু” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে অনেকে দাবী করেছেন, বিএনপির সভাপতি খসরু, মূলত আঙ্গুরকে ঠেক দেয়ার জন্যই নানা কূটকৌশলের রাজনীতি করে আসছিলেন। এরই ফলোশ্রæতিতে বির্তকিত ব্যাক্তিদের থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। অভিযোগ উঠেছে, গত ৮ বছরে আঙ্গুরের বিপুল পরিমাণে নেতাকর্মী আওয়ামী লীগের যোগদান করেছেন। আওয়ামী লীগে যোগদানের জন্য আঙ্গুর অনেক নেতাকর্মীকে উৎসাহিত করে গেছেন। সরকারের হামলা, মামলার শিকার হওয়া অনেক নেতাকর্মীকে অস্বীকার করার নজিড়ও রয়েছে দুইভাইয়ের বিরুদ্ধে। অনেকে দাবী করেন, দুইভাইয়ের ইচ্ছাতেই বিএনপিতে দলীয় কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে দাবী করছেন, সরকারের রোষানালের শিকার আনোয়ার হোসেন অনু ও নজরুল ইসলাম আজাদের নিন্ত্রয়ণে চলে গেছে উপজেলা বিএনপি রাজনীতি। দলটির আগামী কমিটিতে অনুসহ আজাদের কর্মী-সমর্থকরাই আগামী কমিটিতে অভিষেক হতে যাচ্ছেন। উপজেলা বিএনপিতে এমনই গুনজন চলছে, তবে কপাল পোড়তে পারে খসরু ও আঙ্গুরের।
সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুরকে বিএনপির রাজনীতিতে নিয়ে আসেন বর্তমান কেন্দ্রীয় বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এএম বদরুজ্জামান খান খসরু। খসরু আঙ্গুরের আপন ভাই। খসরু বরাবরই অভিযোগ করে আসছেন, ৯০’এর দশকে আঙ্গুর হাইজাদী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের স-সভাপতি ছিলেন।
তার পরও ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আঙ্গুুর। এর পর ১/১১ এর সময় দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারের রোষানাল থেকে বাঁচতে আঙ্গুর বিএনপির দল ভাঙ্গার ষড়যন্ত্রকারী সংস্কারবাদীদের সঙ্গে মিলিত হন। আঙ্গুরের বদৌলতে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের আসনে অভিসিক্ত হন নানা অপকর্মের হোতা বিতর্কিত নেতা ইউছূফ আলী ভূঁইয়া। খসরু’র বদৌলতেও হাবুকে বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। খসরু’র দেয়া একেরপর এক পকেট কমিটির প্রতিবাদ করায় হাবুকে অব্যাহতি দিয়ে ওই পদে বহাল করা হয় হাশেম ফকিরকে। সম্প্রতি, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে অনেকে বলেছেন, মুলত রাজনীতিতে আঙ্গুরকে ঠেগ দিতেই খসরু সাহেব এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে হাবুকে সাধারণ সম্পাদক পদে আসিন করে ছিলেন। দলকে নিজের কব্জায় রাখতে গিয়ে একজন বিতর্কিত ব্যাক্তিকে দলে প্রতিষ্ঠিত করেন খসরু।
উপজেলা বিএনপির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একনেতা বলেন, সারাদেশে অফিস ঘিরে দলীয় রাজনীতি পরিচালিত হলেও; আড়াইহাজারে বিএনপির রাজনীতি পরিচালিত হয়ে আসছে ঢাকা বসে। এখানে কার্যালয়ের সামনে একটি মানববন্ধন তো দূরের কথা বিএনপি কার্যালয়ের তালা খুলতে পারেনি আঙ্গুর ও খসরু। নেতাকর্মীদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিলি খেলতে থাকেন আঙ্গুর ও খসরু। পরে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন তৎকালীন কেন্দ্রীয় যুবদলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সহ-সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক ৯০’এর আন্দোলনের প্রয়াত নেতা এএফএম ইকবাল।
জানা গছে, জেলা কমিটিতে আড়াইহাজার থেকে সদস্য করা হয়েছে বদরুজ্জামান খান খসরু, নজরুল ইসলাম আজাদ ও আতাউর রহমান আঙ্গুরকে। তবে এ কমিটি গঠনের পিছনে কাজ করেছেন নজরুল ইসলাম আজাদ-এমনটাই জানা গেছে। তবে নতুনভাবে যোগ হয়েছে দলটির উদীয়মান নেতা আনোয়ার হোসেন অনু। জানা গেছে, এই নেতার বিরুদ্ধে প্রায় অর্ধশতাধিক রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা রয়েছে। তিনি বিএনপির বিরাট একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ করছেন।
এরই মধ্যে ১ এপ্রিল জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরকে তিনি বিপুল সংখ্যক কর্মী-সমর্থক নিয়ে সংবর্ধনা দিয়েছেন। এখানে যৌতিক কারণেই জেলা বিএনপির সভাপতির কাছে উপজেলা বিএনপির নেতারা অনুকে সভাপতি দাবি করেছেন। উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা বলেছেন, সার্বিক পরিস্থিতিতে বুঝা যাচ্ছে ব্যর্থতার দায় নিয়ে আড়াইহাজার বিএনপির রাজনীতি নিয়ন্ত্রকের আসন থেকে সরে দাঁড়াতে হতে পারে আঙ্গুর ও খসরুকে। অপরদিকে উপজেলা বিএনপির রাজনীতি দুই উদীয়মান ও তরুণ নেতা আনোয়ার হোসেন অনু’সহ নজরুল ইসলাম আজাদের নেতাকর্মীদের অভিষেক হতে যাচ্ছে।