গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এমপি বলেছেন, একটা সময় ছিলো, যখন বিদেশিরা বাংলাদেশকে একটি তলি বিহীন ঝুড়ির সাথে তুলনা করতো। কিন্তু এখন তারাই এদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিষ্মিত। আমি যখন দেশের বাইরে যাই তখন বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীরা বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের বিষয়ে আমার কাছে বিষ্ময় প্রকাশ করেন। সাড়া বিশ্বের কাছেই উন্নয়নের বিষ্ময় বাংলাদেশ। আর এই অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করছে বিএনপি জামায়োতের তৈরী জঙ্গীরা। দেশ থেকে জঙ্গী নিমুর্ল করতে পারলে আরো উন্নয়ন হবে।শনিবার (৩০ জুলাই) দুপুরে শহরের চাষাড়ায় বিকেএমইএর ভবন নির্মানের ভিত্তি প্রস্তর কাজের উদ্বোধন এবং নীট শিল্পের মৃত শ্রমিকদের পরিবারের মাঝে গ্রুপ বীমা দাবীর চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ উন্নয়নের দিকে গতিশিল হয়েছে। বিদেশিরা যদি আমার কাছে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা জানতে চান, তাহলে আমি বলি, আগে দেশে সাড়ে ৭ কোটি জনসংখ্যা ছিলো, তখন খাদ্যের অভাব হতো। এখন ১৬ কোটি মানুষ রয়েছে, তবে খাদ্যের সংকট নেই।
তিনি আরো বলেন, আমি পাকিস্তানের বানিজ্য মন্ত্রী কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আপনাদের রপ্তানী কত? তিনি বলেছিলেন, আমাদের রপ্তানী ২১ বিলিয়ন এবং রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলার। এর প্রতিউত্তরে আমি বলেছি, আমাদের রপ্তানী ৩৪ বিলিয়ন এবং রিজার্ভ ৩৭ বিলিয়ন ডলার। আমার কথা শুনে তিনি আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন।
দেশের রপ্তানী শিল্পের সাথে নতুন সম্ভাবনা যোগ করে তিনি বলেন, আমরা চাউল রপ্তানীর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। আগামীতে ৩ কোটি ৮০ লক্ষ মেট্টিক টন চাউল রপ্তানী করা হবে। শুধু রপ্তানীর দৃষ্টিকোন থেকেই নয়, ভারত-পাকিস্তানের চাইতে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বেশি, শিশু মৃত্যু ও মাতৃ মৃত্যুর হার কম। তাই ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ আর স্বপ্ন নয়, এটা আমাদের জন্যে বাস্তব।
এদিকে সাম্প্রতিক জঙ্গি তৎপরতার বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের এই অগ্রযাত্রাকে বাঁধাগ্রস্থ করার জন্যে তথাকথিত একটি চক্র ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এরা সফল হবে না। শেখ হাসিনা বিচক্ষন এবং তার পিতার মতই তিনি কাউকে ভয় করেন না। আসলে যারা ২০১৫ সালে দেশে আগুন হামলা চালিয়েছে, তারাই আজ দেশে সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে। তবে আমি যানি, কোন দিনও সন্ত্রাস সফল হয়না। যদি হতো তাহলে বিশ্বের অনেক দেশই ধ্বংস হয়ে যেত।
আলোচনা পর্বের পর নীট শিল্পের ৮০ জন মৃত শ্রমিকদের পরিবারের মাঝে গ্রুপ বীমা দাবীর ২ লাখ টাকা করে মোট ১ কোটি ৬০ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ ও বিকেএমইএর সভাপতি আলহাজ্ব একেএম সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ আলহাজ্ব একেএম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ আলহাজ্ব লিয়াকত হোসেন খোকা, সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ এড. হোসনে আরা বাবলী, বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের সিনি: সচিব হেদায়েত উল্লাহ আল-মামুন, রপ্তানী উন্নয়য়ণ ব্যুরো’র সিইও মাফরুহা সুলতানা, শ্রমিক নেতা আলহাজ্ব কাউছার আহমেদ পলাশ, প্রমুখ।
এর আগে সকাল ১১ টায় ফতুল্লার চাঁনমাড়ি এলাকায় নারায়য়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এর নবনির্মিত ভবন উদ্বোধণ করেন, বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এমপি। একই সাথে ভবনটিতে চেম্বার অব কমার্সের ৫টি ট্রেনিং সেন্টারের উদ্বোধন করেন তিনি।
বিকেএমইএ’র অধীনে পরিচালিত অর্থ মন্ত্রনালয় ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট এর অর্থায়নে নবনির্মিত ওই ভবনটিতে উদ্বোধন করা হয়, এ্যাপারেল মার্চেন্ডাইজিং, সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স এন্ড সিএসআর ইস্যুজ, ফায়ার সেফটি মেনেজম্যান্ট এন্ড রিস্ক এসেসম্যান্ট, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড লীন ম্যানুফ্যাকচারিং ও স্কীল ট্রেনিং প্রোগ্রাম অপারেট ট্রেনিং প্রকল্প।