আব্বাসী মঞ্জিল জৈনপুর দরবার শরীফ ইলমে শরিয়ত, তরিকত ও মা’রেফাত প্রচারের এক উজ্জ্বল মারকাজ । হাদীয়ে বাঙ্গাল শাহ কারামাত আলী জৈনপুরী (রহঃ) এর নাতী শাহ সুফি আল্লামা জহুরুদ্দীন আহমাদ আব্বাসী ওয়া সিদ্দিকী (রহঃ) দরবারটির প্রতিষ্ঠাতা । হাদীয়ে বাঙ্গাল শাহ কারামাত আলী জৈনপুরী (রহঃ) সুদীর্ঘ ৫০ বছর বাংলা, বিহার ও আসামে দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছেন । যার ফলশ্রুতিতে ইতিহাসের সাক্ষ্য অনুযায়ী তাঁর হাতে লক্ষ লক্ষ মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেছেন । তাঁর ইন্তেকালের পর থেকে তাঁর বংশের যোগ্য উত্তরসূরিগণ দেড় শতাধিক কাল পরও সারা বাংলায় ঘুরে ঘুরে মানুষকে ওয়াজ নসীহতের দ্বারা দ্বীনের সঠিক শিক্ষা দিয়ে হেদায়েতের কাজ করে যাচ্ছেন । হাদীয়ে বাঙ্গাল শাহ কারামাত আলী জৈনপুরী (রহঃ) এর উত্তরসূরি গণের মধ্যে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র শাহ সুফি আল্লামা জহুরুদ্দীন আহমাদ আব্বাসী (রহঃ) । যিনি ১৯৫১ সালে আব্বাসী মঞ্জিল জৈনপুর দরবার শরীফের জায়গা খরীদ করেন । আল্লামা জহুরুদ্দীন আহমাদ (রহঃ) ১৯৫২ সালে মুন্সিগঞ্জে ইন্তেকাল করেন । তাঁর জানাজার নামাজ পড়ান তাঁর তৃতীয় সন্তান তাঁরই মনোনীত পরবর্তী গদ্দিনাশীন আল্লামা শাহ সুফি সিদ্দিক আহমাদ আব্বাসী জৈনপুরী (রহঃ) । পিতার ইন্তেকালের পর তিনি স্থায়ীভাবে আব্বাসী মঞ্জিল জৈনপুরী দরবারে বসবাস শুরু করেন । এবং এখান থেকেই তিনি সুদীর্ঘ ৫০ বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সফর করে ওয়াজ নসীহতের দ্বারা মানুষকে হেদায়েত করেছেন এবং বাহাছ-মুনাজারা ও ফতুয়া-ফারায়েজ এর মাধ্যমে সঠিক পথ ও মত মানুষকে দেখিয়েছেন । ১৯৯৭ সালের ২৩-শে ডিসেম্বর এ মহান মনিষী দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়ে জান্নাতবাসী হন । তাঁর জানাজার নামাজ পড়ান তাঁর একমাত্র সন্তান তাঁরই মনোনীত পরবর্তী গদ্দিনাশীন আল্লামা শাহ সুফি নিছার আহমাদ আব্বাসী ওয়া সিদ্দিকী (রহঃ) । ১৯৯৭ সালের ২৯শে ডিসেম্বর রোজ সোমবার দরবারের সকল খলিফা ও মুরিদগণের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি আব্বাসী মঞ্জিল জৈনপুর দরবার শরীফের দায়িত্ব গ্রহণ করেন । বাংলাদেশে সুন্নীয়ত প্রতিষ্ঠায় এ সিলসিলায় তিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃত । সারাদেশে ওয়াজ নসীহতের দ্বারা অসংখ্য মানুষকে তিনি হেদায়েত করেছেন । ২০০৬ সালের ১৩ই মার্চ রোজ সোমবার এ মহান মনিষী দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়ে জান্নাতবাসী হন । তাঁর জানাজার নামাজ পড়ান তাঁর চতুর্থ সন্তান তাঁরই মনোনীত পরবর্তী গদ্দিনাশীন পীর আল্লামা মুফতী ড. সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী ওয়া সিদ্দিকী জৈনপুরী হুজুর । ২০০৬ সালের ১৭ই মার্চ রোজ শুক্রবার দরবারের সকল খলিফা ও মুরিদগণের উপস্থিতিতে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে উক্ত দরবারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন । আলহামদুলিল্লাহ্ বর্তমানে তিনি তাঁর পূর্বসূরিগণের মূল যে কাজ ওয়াজ নসীহত করা, ফতুয়া ফারায়েজ দেওয়া ও তালীম তারবিয়তের মাধ্যমে আত্নশুদ্ধির কাজ তা উক্ত দরবারকে কেন্দ্র করে করে যাচ্ছেন । আলহামদুলিল্লাহ্ বর্তমানে এ দরবারের পরিচিতি, সুখ্যাতি ও প্রচার সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে মাশাআল্লাহ । উত্তরোত্তর দরবারকে কেন্দ্র করে দ্বীনি খিদমত বেড়েই চলছে ।।
বর্তমান খেদমত সমূহঃ———
(১) আব্বাসী মঞ্জিল থেকেই বর্তমান গদ্দিনাশীন পীর আল্লামা মুফতী ড. সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী ওয়া সিদ্দিকী জৈনপুরী হুজুর সারা বাংলাদেশে সফর করে ওয়াজ নসীহতের মাধ্যমে হেদায়েতী কাজ করে যাচ্ছেন ।
(২) বাংলাদেশের সবচেয়ে দামী ও পরিচিত ইসলামী সংগঠন তাহরিকে খাতমে নুবুওয়্যাত বাংলাদেশ ও তাঁর সহযোগী সংগঠন জামিয়াতুস শাবাব বাংলাদেশ উক্ত দরবারকে কেন্দ্র করেই পরিচিত হচ্ছে ।
(৩) সঠিক আকীদার যোগ্য আলেম তৈরির জন্যে উক্ত দরবারকে কেন্দ্র করে একটি পূর্ণাঙ্গ দ্বীনি প্রতিষ্ঠান মক্তব থেকে ইফতা পর্যন্ত মাদ্রাসা পরিচালিত হচ্ছে ।
(৪) দরবার শরীফে নিয়মিত জিকির ও মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে তরিকতের সবক ও চর্চা করা হচ্ছে ।
উভয় সংগঠনের আমীর হিসেবে এবং মাদ্রাসার পরিচালক ও শাইখুল হাদীস হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বর্তমান গদ্দিনাশীন পীর আল্লামা মুফতী ড. সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী ওয়া সিদ্দিকী জৈনপুরী হুজুর ।।